পাইপ দিয়ে ১৬ শিক্ষার্থীকে পিটুনি, মুচলেকায় ছাড়া পেলেন সেই অধ্যক্ষ
নরসিংদীর পলাশে ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনায় মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে ছাড়া পেলেন পলাশ থানা সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী।
মঙ্গলবার (১০ মে) সন্ধায় পলাশ থানায় মুচলেকা দিয়ে তিনি ছাড়া পান।
এর আগে সোমবার (৯ মে) বেলা ১১টার দিকে কলেজের শ্রেণিকক্ষে ১৬ জন শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অধ্যক্ষকে রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীদের পরিবার থেকে থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে এ ধরনের ঘটনা আর কখনো ঘটাবেন না মর্মে থানায় মুচলেকা দিয়ে মঙ্গলবার সন্ধায় ছাড়া পান অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী।
পলাশ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল মামুন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে প্রতিদিন ছয়টি বিষয়ে পাঠদান করা হয়। রোববার (৮ মে) ষষ্ঠ ক্লাসের শিক্ষক পাঠদান করবেন না এমন খবরে ক্লাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। পরে শিক্ষক এলে কয়েকজন ছাত্র এসে পাঠদানে যুক্ত হন। পরদিন সোমবার সব শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হলে যথারীতি পাঠগ্রহণ শুরু করে।
বেলা ১১টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে ষষ্ঠ ক্লাস না করা শিক্ষার্থীদের দাঁড় করান। পরে একে একে শাকিব, সিজান, আদনান, সোহেল, শিফাত, নয়ন, তাহসিন, আশরাফুল, আমিরুল ও তাসফিকসহ ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহতের ছবি পোস্ট করে অধ্যক্ষের বিচার দাবি করেন। অল্প সময়ের মধ্যে এটি ভাইরাল হয়ে যায়।
পরে বিষয়টি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে এলে ওইদিন রাতেই অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিলন কৃষ্ণ হালদার জানান, অধ্যক্ষ আমীর হোসেন গাজীকে কলেজ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে তিন সদ্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সঞ্জিত সাহা/এসআর/এএসএম