পরকীয়ায় বাধা দেয়ায়...
পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় এক গৃহবধূকে আগুনে ঝলসে দেয়া হয়েছে। সোমবার বিকেলে নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কর্তব্যরত ডাক্তার সজল বকসি জানান, আহতের শরীরের ৫০ শতাংশই আগুনে পুড়ে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাবানা বেগম (২৪) জানায়, আমার স্বামী দিন নেই রাত নেই মোবাইলে একটি মেয়ের সঙ্গে শুধু কথা বলে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে যেভাবে কথা বলাবলি হয় আমার স্বামী তেমনভাবেই কথা বলে। আর প্রায়ই আমার বাবার বাড়ি থেকে পাঁচ হাজার-দশ হাজার টাকা এনে দিতে বলে। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে বাড়ির কাজ করার সময় দেখি মোবাইলে কথা বলছে। মোবাইলটা কেড়ে নিলে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকে। এতে আমার বাম হাতটা ভেঙে যায়। বারান্দায় বসে কাঁদতে থাকলে পেছন থেকে আমার পরনের ম্যাক্সিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি নেভানোর চেষ্টা করে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি হাসপাতালের বিছানায়। আমার এক বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে।
প্রতিবেশীরা জানায়, মেয়েটা খুবই ধৈর্যশীল। ওর স্বামী অন্য এক মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে খালি কথা কয়। দুজনের মধ্যে এ নিয়ে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হতো। সোমবারে এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মেয়েটারে লাঠি দিয়ে মারে। পরে তার শরীরে আগুন ধরায় দেয়। পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলেও তার শরীরটা পুড়ে যায়।
শাবানার বাবা আকছির মোল্যা বলেন, আমার বাড়ি সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের বোড়ামারা গ্রামে। তিন বছর আগে মেয়েকে তুলারামপুর ইউনিয়নের দেবিপুর গ্রামের আক্তার মোল্যার ছেলে আনজারুল মোল্যার সঙ্গে বিয়ে দেয়। বিয়ের সময় সাধ্যমত মেয়ে-জামাইকে দেয়া হয়।
আক্তার মোল্যা (ছেলের বাবা) বলেন, আমি কাঠের ব্যবসা করি। সারা দিনই বাইরে বাইরে থাকি। ছেলে-বৌয়ের মধ্যে কি নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়েছে জানি না। বাড়ি এসে শুনি বৌমা হাসপাতালে। মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও আনজারুল মোল্যাকে পাওয়া যায়নি।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ বিশ্বাস বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। তারপরও খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাফিজুল নিলু/এসএস/আরআইপি