ঠাকুরগাঁওয়ে হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ও কাতিহার হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা গেটের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা, স্কুলশিক্ষক খায়রুল বাশার, জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
খায়রুল বাসার বলেন, আমি একজন স্কুলশিক্ষক। গত রোববার গরু কিনতে নেকমরদ হাটে গেলে ইজারাদার ও তাদের লোকজনের কাছে চরম অপমানিত হই। তারা সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে বেশি টোল নিচ্ছিল। এ অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করায় আমাকে বাজে ভাষায় গালাগাল শুনতে হয়েছে। আমি এর সুরাহা চাই।
আরেক স্কুলশিক্ষক জিল্লুর রহমান বলেন, আমি সরকারের অধীনে চাকরি করি। সরকারের নিয়মকানুন মেনে চলি। কিন্তু কাতিহার হাটে নাতির আকিকার জন্য ছাগল কিনতে গেলে আমাকে ন্যাক্কারজনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। তারা সরকার নির্ধারিত ৯০ টাকার বদলে ২০০ টাকা আদায় করছে। আমি এর কারণ জানতে চাইলে তারা বলে নিলে নেন না নিলে ছাগল রেখে চলে যান।
কিসমত আলী একজন দিনমজুর। ছাগল বিক্রি করতে এসেছিলেন নেকমরদ হাটে। তিনি বলেন, আমাদের জিম্মি করে রাখছে হাট ইজারাদাররা। যারা বিক্রি করছে এবং যারা কিনছে দুপক্ষের থেকেই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। সবকিছুতেই বেশি টোল নিচ্ছে ইজারাদার। আমার কাছে মনে হয়েছে, এগুলো দিনে-দুপুরে ডাকাতি করা হচ্ছে।
আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়ে রানীশংকৈল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা জনপ্রতিনিধিরা এর দায় এড়াতে পারি না। জনগণ তাদের সঠিক পন্থা অবলম্বন করেও যদি হেনস্তার শিকার হন, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন তাহলে এর জবাব দিতে হবে। অভিযোগ পাওয়ার পর আমি নিজে হাট দুটি পরিদর্শন করেছি এবং আমার নিজ চোখে এ লুটপাট আমি দেখেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি বলতে চাই, উপজেলা প্রশাসন শুধু জরিমানা না করে যাতে আর কখনো হাটগুলোতে অতিরিক্ত টোল না তুলতে পারে সেদিকে সোচ্চার হন। প্রতি সপ্তাহে ৭-১০ লাখ টাকা আয় করে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে ইজারাদাররা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ না হলে জনগণকে নিয়ে আরও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেকমরদ হাটের ইজারাদার আব্দুল কাদের অতিরিক্ত টোল নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গোটা জেলায় যেমন বেশি নিচ্ছে আমিও তেমন বেশি নিচ্ছি।
রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুলকার নাইন কবির জাগো নিউজকে বলেন, হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পেলেই জরিমানা করেছি। আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্মারকলিপি পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠানো হবে।
তানভীর হাসান তানু/এমআরআর/জেআইএম