ফটিকছড়িতে দুই ম্যানেজারকে পিটিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২৮ এএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

ফটিকছড়িতে দুই চা বাগান ম্যানেজারকে পিটিয়ে জখম করেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপ ইউপিডিএফ। রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার কর্ণফুলী চা বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
 
এ ঘটনার পর কাঞ্চন নগর ও আশপাশের এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
জানা গেছে, চা বাগানের জমি থেকে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদের জের ধরে বিক্ষুব্ধ  পাহাড়িরা বাগানের ম্যানেজার শাহনেওয়াজ ও একই বাগানের ট্যাকবাড়িয়া ডিভিশনের ম্যানেজার মো. ইলিয়াছকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে নগরীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মফিজ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
 
এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সত্যতা যাচাইয়ের পর দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ফটিকছড়ি-লক্ষ্মীছড়ি সীমান্তে ট্যাকবাড়িয়া এলাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ও চা বাগান কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিল। সীমানা বিরোধ ও চা বাগানের ভূমি বিরোধের জের ধরে গত সপ্তাহে উপজাতিদের ৯টি ঘর পুড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় পাহাড়ি-বাঙ্গালির মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।

বিরাজমান উত্তেজনা নিরসনে গত বৃহস্পতিবার কাঞ্চননগর ইউনিয়ন পরিষদে এক শান্তি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপজাতিরা অভিযোগ করেন, ট্যাকবাড়িয়া এলাকায় তারা দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করে আসছেন। এসব এলাকার ভূমিও তারা চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।  কিন্তু চা বাগান মালিক পক্ষ জোরপূর্বক তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন।

এদিকে শান্তি বৈঠকে ব্র্যাক কর্ণফুলী চা বাগান কর্তৃপক্ষ উপজাতিদের এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন। বাগানের ম্যানেজার শাহনেওয়াজ জানান, চা বাগানের ইজারাকৃত ট্যাকবাড়িয়া ডিভিশনের বিশাল এলাকা ৫-৬ মাস আগে থেকে পাহাড়িরা টং ঘর তৈরি করে দখল করে রেখেছে। তাদের চা বাগানের জমি দখল ছেড়ে দিতে বলা হলেও তারা বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। এসময় বৈঠকে পুড়ে যাওয়া ঘর মেরামত করে দেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়। তাছাড়া এই বিরোধ নিস্পত্তিকল্পে আগামী ২৮ জানুয়ারি একটি সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

শান্তি বৈঠকে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট উত্তম কুমার মহাজন, লক্ষ্মীছড়ির ভাইস চেয়ারম্যান অংগ্য প্রু মারমা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বেবি রানী বসু, ফটিকছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ মফিজ উদ্দিন, লক্ষ্মীছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ রকিবুল হাসান, বাইন্যাছড়া ক্যাম্প কমান্ডার ক্যপ্টেন হাসান মেহেদী, কাঞ্চন নগর ইউপি চেয়ারম্যান রশীদ উদ্দিন কাতেব, লেলাং ইউপি চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন মুহুরী, ট্যাকবাড়িয়া চা বাগানের ম্যানেজার মো: ইলিয়াস, কর্ণফুলি চা বাগানের ম্যানেজার শাহনেওয়াজ এবং লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন ব্যাপারী উপস্থিত ছিলেন।

জীবন মুছা/এসকেডি/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।