পাহাড়ে চলছে ‘পাঁজন’ আতিথেয়তা
চৈত্রের শেষ দিন আজ। এদিন পাহাড়িদের মূল বিজু উৎসব। সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে কাটাচ্ছে তরুণ তরুণীরা। ঘরে ঘরে নিমন্ত্রণ আর আতিথিয়তার অনাবিল আনন্দ চারদিকে। চলছে পাহাড়ি ঘরে ঘরে ঐতিহ্যবাহী খাবার পাঁজন ভোজন।
ঐহিত্যবাহী খাবার ‘পাঁজন’ পরিবেশন আর একে অন্যের বাড়িতে যাওয়া আসার মধ্যদিয়ে বৈসাবি উৎসব তার চিরায়ত ব্যঞ্জনায় রূপ লাভ করে। অনেক ধরনের সবজি দিয়ে ঐতিহ্যবাহী এ ‘পাঁজন ’ তৈরি করা হয়।
পাহাড়িদের বিশ্বাস, এ ‘পাঁজন’ খেলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া একদিনে সাত পরিবারে এ ‘পাঁজন’ খেলে সর্বরোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। বিজুর দিনে পাহাড়িদের বাসায় পাহাড়ি-বাঙালি সবাই যায়। এদিন ফুটে ওঠে অসাম্প্রদায়িক মনোভাব।
বিভিন্ন প্রকার সবজি, শুঁটকি বা চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করা হয় ‘পাঁজন’। বৈসাবিতে ধনী-গরিব সব বাড়িতেই পরিবেশন করা হয় বিশেষ এ খাবারটি। যুগ যুগ ধরে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বিশেষ প্রকারের এ তরকারি বৈসাবিতে পরিবেশনের মাধ্যমে তাদের ঐতিহ্য টিকিয়ে রেখেছে। তবে বর্তমানে বৈসাবিতে পাঁজনের পাশাপাশি খাবার তালিকায় মুখরোচক অনেক খাবারই স্থান পাচ্ছে। অনেকেই বলছে এতে পাঁজনের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা নিয়ে ঝুঁকিতে পড়ছে।
মঙ্গলবার ‘ফুল বিজু’র পরপরই তরুণীরা নিজেদের ঘরে ফিরে যায়। মুরুব্বিদের প্রণাম করে আশির্বাদ গ্রহণ করে। ফুল ভাসানো শেষে বয়স্কদের স্নান করানো হয়। পাড়ার বয়স্কদের শরীরে পানি ঢেলে তাদের আশীর্বাদ কামনা করেন তরুণ-তরুণীরা। দেওয়া হয় নতুন পোশাক। আজ সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে কাটাবে তরুণ তরুণীরা। আগামী শনিবার সাংগ্রাই জলোৎসবের মাধ্যমে শেষ হবে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা।
শংকর হোড়/আরএইচ/জেআইএম