শেরপুরে পুলিশের উপস্থিতিতে কুপিয়ে হত্যা, ভিডিও ভাইরাল
শেরপুরের শ্রীবরদীতে পুলিশের সামনেই শেখবর আলী নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ১৮ দিন পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ২৩ মার্চ ওই হত্যার ঘটনা ঘটলেও ভিডিওটি রোববার (১০ এপ্রিল) ভাইরাল হয়। ভিডিওটি প্রকাশের পর জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে শ্রীবরদী উপজেলার হালুয়াহাটি গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে জাকির হোসেন জিকোর সঙ্গে প্রতিবেশী মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে শেখবর আলীর জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে ২২ মার্চ প্রতিপক্ষ জিকোসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন শেখবর আলীর মা মাহফুজা বেগম (৬৫)।
পরদিন (২৩ মার্চ) শ্রীবরদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়ারেস চারজন ফোর্সসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। ওইসময় পুলিশের উপস্থিতিতেই দুই পক্ষের লোকজন তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জিকো, সাইফুল ইসলামসহ চার থেকে পাঁচজন শেখবর আলীর ওপর হামলা চালান। গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত এবং শরীরে বেধড়ক মারপিটে ঘটনাস্থলেই মারা যান শেখবর।
ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখবর আলীর ছোট ভাই মাহফুজ বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।
পরে পুলিশ সুপার হাসান নাহিদ চৌধুরীসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই মামলায় মূল আসামি জিকো ও সাইফুলসহ এ পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্রসহ বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করেছে। এরই মধ্যে আসামি জিকো ও সাইফুল ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
তবে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের সামনেই অতর্কিতভাবে রাম দা, দা, গরু জবাই করার ছুরি ও লাঠিসোটা নিয়ে শেখবর আলীর ওপর উপর্যুপরি আঘাত করেন জিকো, সাইফুলসহ অন্যরা। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনার আকস্মিকতায় পুলিশও হতবিহবল হয়ে পড়ে। পরে পুলিশকেও ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেন জিকোর লোকজন।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, শেখবর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি জিকো, তার ভাই জজ মিয়া ও সাইফুলসহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ওই ঘটনায় এসআই ওয়ারেস আলীকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি সতর্কতা হিসেবে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ইমরান হাসান রাব্বী/এসআর/জেআইএম