প্রেমের নামে নিখুঁত প্রতারণা


প্রকাশিত: ০৩:০১ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬
আত্মহত্যার আগে লেখা যাওয়া মোবাইল নম্বরটি

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর প্রেমের নামে নিখুঁত প্রতারণার শিকার হয়ে কিশোরী সুলতানা আত্মহত্যা করেছে। প্রেমিকের ফাঁদে পড়ে এক পর্যায়ে সে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। বিয়ের আশায় প্রেমিকের সঙ্গে তাকে থাকতে হয়। বিয়ে জন্য চাপ দিলে টাকা চেয়ে বসে মতলববাজ প্রেমিক।

বিয়ের প্রলোভনে এক মাস ১০ দিন কিশোরী সুলতানা ধর্ষণ করা হয়। টাকা দিলে বিয়ে করবে- এমন আশ্বাস পেয়ে টাকার জন্য বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয় তাকে। বাড়ি ফিরে দরিদ্র কৃষক বাবার কাছে টাকা চেয়েও পায়নি। উল্টো খেতে হয়েছে বকা। সঙ্গে ছিল প্রতিবেশিদের অপমান। এসব সহ্য করতে না পেরে সে বাধ্য হয় আত্মহত্যা করতে।

শনিবার দুপুরে পুলিশ সুলতানার মরদেহ উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এর আগে শুক্রবার রাতে সে গলায় ফাঁস দিয়ে উপজেলার উত্তর চর লরেন্স গ্রামের বাড়িতে আত্মহত্যা করে। মৃত্যুর আগে সে বসতঘরের মাটির পিঁড়িতে একটি মোবাইল ফোন নম্বর লিখে যায়।  

নিহত সুলতানা কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স গ্রামের জেবল হকের মেয়ে। অন্যদিকে প্রতারক প্রেমিকের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি কেউ। তবে ওই প্রতারক প্রেমিক ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার একটি ইটের ভাটায় কাজ করে বলে জানা গেছে।

সুলতানার মা খোদেজা বেগম জানান, সবার অজান্তে তার মেয়ের সঙ্গে অপরিচিত কারো সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে পড়ে সে বাড়ি ছেড়ে ফেনীর দাগনভূঞায় পালিয়ে যায়। এক মাস ১০ দিন পর ৬ জানুয়ারি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় টাকা নেয়ার জন্য। মেয়ে বাড়ি এসে টাকা চাইলে তা দেয়া বাবার পক্ষে সম্ভব হয়নি। এ খবর জানতে পেরে প্রতিবেশিরা অপমান করতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে লজ্জা আর ক্ষোভে মেয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
 
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, প্রতারক প্রেমিক এক মাস ১০ দিন ধরে ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। এতে সে অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিয়ে না করে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়ায় সে ক্ষোভে আত্মহত্যা করতে পারে।

এ ব্যাপারে কমলনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির আহম্মদ বলেন, কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে করা অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে।

সে অন্তঃস্বত্ত্বা ছিল কিনা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যাবে না। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাজল কায়েস/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।