কলমাকান্দার জামশেন গ্রামজুড়ে শুধুই আতঙ্ক


প্রকাশিত: ০১:৩২ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার জামশেন গ্রামজুড়ে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিদিন এ গ্রামে চিকেন পক্স বা জলবসন্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে জলবসন্তে গ্রামটিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শিশুসহ আক্রান্ত হয়েছে আরো ১৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চতুথ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশু মারা গেছে।

এদিকে শনিবার পাশের গ্রামের একজন আক্রান্ত হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছে এ রোগটির নাম ‘ম্যানিনজকক্কাল ম্যানিংজাইটিস।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগে কলমাকান্দার কৈলাটি ইউনিয়নের জামশেন গ্রামের ছমেদ আলীর ছেলে ফজলু মিয়ার (৪৫) শরীরে এ রোগ দেখা দেয়। স্থানীয়দের মতে রোগটি বসন্ত রোগের মতো। এ রোগের প্রাথমিক লক্ষণে শরীরে জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি, ব্যথা ও চামড়ায় বসন্তের মতো কালচে গুটি গুটি দাগ দেখা দেয়। গুটি গুটি দাগের কারণে গ্রামবাসীর ধারণা ‘এটি গুটিবসন্ত’।

স্থানীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসা নিয়ে সাতদিনের পর ফজলু মিয়া এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর এই রোগে একই গ্রামের রবণ খাঁ (৭২), ফৌজদার মিয়ার মেয়ে মাসুদা আক্তার (১৩) ও ছেলে রকিবুল ইসলাম (৫) ও হাসিম উদ্দিনের মেয়ে মারুফা আক্তার (৯) মারা যায়।

 এছাড়া এই রোগে এ পর্যন্ত নারী শিশুসহ আরো ১৭ জন আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সন্তাদের বাবা ফৌজদার মিয়া জাগো নিউজকে জানান, এই রোগে আটদিন আগে তার এক মেয়ে ও পাঁচ দিন পর এক ছেলে মারা গেছে। এখন এলাকার সবাই আতঙ্কে আছে। কেউ কেউ ভয়ে গ্রাম ছেড়ে আত্মীদের বাড়িতে চলে গেছে।

Netrokona

এ ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে সিভিল সার্জন বিজন কান্তি সরকারের নেতৃত্বে সাত সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি চিকিৎসক দল আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা আক্রান্তদের শরীরের রক্ত, ক্ষত হয়ে যাওয়া চামড়াসহ অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে  আজ (শনিবার) ঢাকায় পাঠিয়েছেন।

সিভিল সার্জন বিজন কান্তি সরকার শনিবার বিকেল জাগো নিউজকে জানান, এক মাসে ওই রোগে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছেন। এটি একটি ভাইরাল জাম জাতীয় ছোঁয়াচে রোগ। এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এ রোগটির নাম ‘ম্যানিনজকক্কাল ম্যানিংজাইটিস’। তবে রোগটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজ শনিবার আইইডিসিআরবি-র মহাখালীতে আলামত পাঠিয়েছি। সেখানে বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলতে পারবেন।

এদিকে এলাকা পরিদর্শন ও রোগ নির্ণয়ের জন্য ঢাকা থেকে একটি চিকিৎসক দল নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

এমএএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।