লিফটে আটকা পড়লেন আইনজীবী-পুলিশসহ ১২ জন, ২০ মিনিট পর উদ্ধার
বরিশাল চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের লিফটে আটকা পড়েছিলেন আইনজীবী, পুলিশ সদস্য ও বিচারপ্রার্থীসহ ১২ জন। প্রায় ২০ মিনিট পর লিফটের দরজা খুলে তাদের উদ্ধার করা হয়।
লিফটের বাইরে এসে এক আইনজীবীসহ দুই পুলিশ সদস্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কিছুক্ষণ পর তাদের জ্ঞান ফিরে আসে। পরে ওই দুই পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সোমবার (৪ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।
লিফটে আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস, আজিজুর রহমান রিয়াজ, জাফরুন্নেছা রোজী, মো. রিয়াজ ও মনিরুল ইসলাম মনির, উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন ও কনস্টেবল কুলসুম আক্তার ছাড়াও কয়েকজন বিচারপ্রার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোখলেসুর রহমান বাচ্চু বলেন, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের পাঁচতলার একটি আদালতে একটি মামলার শুনানিতে আমার অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এজন্য ওই ভবনের নিচতলায় লিফটে ওঠার চেষ্টা করি। তবে সেখানে ভিড় দেখে সিঁড়ি দিয়ে পাঁচতলায় যাই। কিছুক্ষণ পর শুনতে পাই নিচতলায় ১০ জন লিফটে আটকা পড়েছেন। তখন দ্রুত নিচতলায় গিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করি। তবে কোনোভাবেই লিফটের দরজা খোলা যাচ্ছিল না।
তিনি বলেন, ইট দিয়ে পিটিয়েও দরজা খোলা যাচ্ছিল না। এসময় আটকে পড়া ব্যক্তিরা কান্না শুরু করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ২০ মিনিট পর লিফটের দরজা খুলে তাদের উদ্ধার করা হয়।
লিফট থেকে বের হওয়ার পর আইনজীবী ফজলুল হক বিশ্বাস এবং এসআই জসিম উদ্দিন ও কনস্টেবল কুলসুম আক্তার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, ‘১০ তলা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে যাওয়ার জন্য নিচতলা থেকে আইনজীবী, পুলিশ এবং বিচারপ্রার্থীসহ ১২ জন লিফটে উঠলে দরজা বন্ধ হযে যায়। এরপর লিফটি আর ওপরের দিকে উঠছিল না। সেখানেই থেমে ছিল। কোনো সুইচ কাজ করছিল না। লক হয়ে গিয়েছিল। আমাদের চিৎকার শুনে বাইরে থাকা লোকজন উদ্ধারের চেষ্টা করেন। কিন্তু দরজা খোলা যাচ্ছিল না। মিনিট পাঁচেক পর সবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। সেখান থেকে বের হওয়ার পর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরে শুনেছি আমি ছাড়াও কনস্টেবল কুলসুম আক্তার ও ফজলুল হক বিশ্বাস জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। কুলসুম আক্তারকে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
আদালতের নাজির তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নানাভাবে দরজা খোলার চেষ্টা করি। পরে ১০ তলার ছাদে থাকা লিফটের মেশিন রুমে লোক পাঠানো হয়। সেখানে লিফটের সুইচ বন্ধ করে পুনরায় চালু করা হলে নিচে লিফটের দরজা খুলে যায়।
ঘটনার পর জেলা ও দায়রা জজ রফিকুল ইসলাম ও চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিবুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এছাড়া আদালত চলাকালীন সেখানে লিফটম্যান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য গণপূর্ত বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ।
সাইফ আমীন/এসআর/জিকেএস