হেলমেট না পরায় ৩৮৪ জনকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা
দিনাজপুরে হেলমেট না পরায় বিশেষ অভিযানে তিন ঘণ্টায় ৩৮৪টি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ১২ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে রোববার (৪ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ১৩টি উপজেলায় একযোগে এ অভিযান চলে।
এর আগে ২৪ মার্চ বিশেষ অভিযানে ৬০৭টি মামলায় ১৮ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। দুদিন বিশেষ অভিযানে মোট ৯৯১টি মামলায় জরিমানা হয়েছে ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা।
সোহেল রানার (৩৯) বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলায়। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী। রোববার সকালে বিরল থেকে সদর উপজেলার মাতাসাগর এলাকায় বোনের বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। শহরের লিলির মোড় এলাকায় পথরোধ করে ট্রাফিক পুলিশ।
এ সময় হেলমেট না পরার কারণ জানতে চাইলে সোহেল বলেন, ‘মনে নেই, তাড়াহুড়ো করে বের হয়েছিলাম।’ এ কথা শুনে গাড়ির চাবি নেয় ট্রাফিক পুলিশ। হেলমেট না পরে মোটরসাইকেল চালানোয় ৩ হাজার ৬০ টাকা জরিমানা গুনতে হলো সোহেলকে।
অভিযানে থাকা সার্জেন্টরা বলেন, মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট না পরার জবাব প্রায় সবারই একই রকমের। কেউ ভুল করে ছেড়ে এসেছেন, কেউ তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে, কারও মাথা গরম হয়ে যায়, কারও বা দম বন্ধ হয়ে আসে। অজুহাতগুলোর সঙ্গে আমরা বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সচীন চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহীদের হেলমেট পরা শতভাগ নিশ্চিত করতে জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এখন থেকে চলমান অভিযানের পাশাপাশি সপ্তাহে যে কোনো একদিন বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। হেলমেট না পরাসহ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রোববারের অভিযানে জেলার ১৩ থানায় হেলমেট সংক্রান্ত ৩৮৪টি মামলা করা হয়েছে। প্রত্যেককে তিন হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। কেউ তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানা পরিশোধ করেছেন। যারা তাৎক্ষণিকভাবে জরিমানা দিতে পারেননি তাদের মামলা দিয়ে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তারা সরাসরি চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে টাকা জমা দেবেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সচীন চাকমা জানান, ৩৮৪টি মামলার মধ্যে হেলমেট না থাকার কারণে কোতোয়ালি থানায় ৫৩টি, বিরল থানায় ৩৭টি, চিরিরবন্দর থানায় ৩১টি, ফুলবাড়ী থানায় ৩০টি, খানসামা থানায় ৩০টি, কাহারোল খানায় ২১টি, বিরামপুর থানায় ৩১টি, পার্বতীপুর থানায় ২১টি, বীরগঞ্জ থানায় ২২টি, বোচাগঞ্জ থানায় ৩৩টি, নবাবগঞ্জ থানায় ২৬টি, ঘোড়াঘাট থানায় ২১টি ও হাকিমপুর থানায় ২৮টি মামলা করা হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগেও নবাবগঞ্জ উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় একসঙ্গে তিন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। হেলমেট পরা থাকলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুঝুঁকি কম থাকে।
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ উঠতি বয়সী মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তারা হেলমেট না পরাসহ বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। প্রত্যেক মোটরসাইকেল আরোহীকে পেছনে বসা যাত্রীদেরও হেলমেট পরা নিশ্চিত করতে পুলিশ কাজ করছে। এরই মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষকে হেলমেট পরানো সম্ভব হয়েছে। অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি মানুষকে সচেতনও করা হচ্ছে।
এমদাদুল হক মিলন/এসজে/এএসএম