বিষাক্ত কীটনাশকে পোড়ানো হলো ৩ বিঘা জমির ফসল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নওগাঁ
প্রকাশিত: ১০:০১ এএম, ০৩ এপ্রিল ২০২২

নওগাঁর রানীনগরে পূর্বশত্রুতার জেরে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করে কৃষক আনিছুর রহমানের এক একর জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এমন ঘটনায় কৃষক আনিছুর রহমান দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এতে তার প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার পারইল ইউনিয়নের শংকরপুর পূর্ব মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের বাড়ি উপজেলার কামতা শংকরপুর গ্রামে। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষক আনিছুর রহমান সংকরপুর পূর্ব মাঠে তিন বিঘা (এক একর) জমিতে ইরি-বোরো আবাদ করেছেন। ওই পরিমাণ জমি থেকে তিনি সারা বছর ভরণ-পোষণ পেয়ে থাকেন। তার জমিতে লাগানো ধানের গাছ থেকে শীষ বেরোতে শুরু করেছে। বিষাক্ত কীটনাশক জমিতে স্প্রে করায় ক্ষেতের সবগুলো ধানগাছ পুড়ে গেছে। শনিবার সকালে স্থানীয়রা বিষয়টি দেখার পর জমির মালিক আনিছুর রহমানকে অবগত করে। সংবাদ পেয়ে তিনি ক্ষেতে ধান দেখতে যান। ধানের এ অবস্থা দেখে তিনি হতভম্ব যান।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আনিছুর রহমান বলেন, সকালে খবর পেয়ে ক্ষেতে গিয়ে দেখি তিন বিঘা ধানের জমি বিষ দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। শুক্রবার রাতে কামতা শংকরপুর গ্রামের মৃত আইন উদ্দিনের ছেলে তোজাম, গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আতাউর রহমান, ইব্রাহিম ও আব্দুল হাই জমিতে বিষাক্ত কীটনাশক স্প্রে করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। যারা জমিতে বিষ দিয়েছে তাদের সঙ্গে পূর্ব থেকেই দ্বন্দ্ব ছিলো। তিন বিঘা জমিতে প্রায় ৮০-৯০ মণ ধান উৎপাদিত হতো যার বাজার মূল্য প্রায় এক লাখ টাকা।

তিনি বলেন, অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ওই জমির ধান থেকে সারা বছর খাওয়া পরা হয়ে থাকে। এখন জমির ধান হারিয়ে পথে বসার উপক্রম। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে দ্রুত তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণ দিতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বিষাক্ত কীটনাশকে পোড়ানো হলো ৩ বিঘা জমির ফসল

এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করবেন বলে জানান তিনি।

অভিযুক্ত একই গ্রামের মৃত আইন উদ্দিনের ছেলে তোজাম বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাদেরকে ফাঁসাতে এমন কৌশল অবলম্বন করা হতে পারে। আমরা কেউই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।

রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, কীটনাশক দিয়ে ফসল পোড়ানো যা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ফসল নষ্ট করার এমন ধারা থেকে আমাদের সবাইকে বের হয়ে আসতে হবে। ঘটনাস্থলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে পরামর্শ এবং সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন আকন্দ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আব্বাস আলী/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।