বাফার গুদামে ভেজাল সার, ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে যশোরে মামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ২৯ মার্চ ২০২২

বাফার গুদামে ৭০ মেট্রিক টন (পাঁচ ট্রাকে) ভেজাল টিএসপি সার দেওয়ার অভিযোগে ও ৭৩ মেট্রিক টন সার আত্মসাতের অভিযোগে দুই ডিলারের নামে মামলা করেছেন চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ সোলায়মান।

রোববার রাতে যশোর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করা হয়। মামলা নম্বর ৮৬/৩৪৪।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, চট্টগ্রামের মেসার্স সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের মালিক আহসান হাবিব ও একই জেলার সন্দ্বীপ থানার ইব্রাহিম হায়দার। মামলায় প্রায় ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ আদায় করতে বলা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়েছে, যশোর বাফার গুদামে পরিবহনের জন্য মেসার্স সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে মোট ২৪১ মেট্রিক টন সার বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা গত ১৪ ও ১৫ মার্চ তারা ১৭টি ট্রাকযোগে নিয়ে যান। এর মধ্যে ৫টি ট্রাকযোগে ১৭ মার্চ যশোর বাফার গুদামে ৭০ মেট্রিক টন সার আনলে গুদাম ইনচার্জ আক্তারুল

ইসলাম সারগুলো ভেজাল সন্দেহে সেগুলো বাইরে আটকে রাখেন। পরে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি সারের ৬টি নমুনা নিয়ে টিএসপির ল্যাবে পরীক্ষা করে। এতে সব সারই ভেজাল পাওয়া যায়।

তদন্ত কমিটি গত ২৪ মার্চ তদন্ত রিপোর্ট টিএসপির এমডির কাছে জমা দেয়। সেখানে দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল।

যশোরে গুদামের ইনচার্জ আক্তারুল ইসলাম জানান, ১৭ মার্চ ওই সার যশোর গুদামে এসে পৌঁছায়। সৈয়দ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি সার কারখান থেকে ৫টি ট্রাকে করে ৭০ মেট্রিক টন সার গত ১৫ মার্চ রাতে যশোর সদরের বাহাদুরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন নিয়ন্ত্রিত বাফার গুদামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এ সময় ট্রাকবোঝাই সার দেখে তার সন্দেহ হলে তিনি খালাস বন্ধ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্দেহের বিষয়টি অবহিত করেন।

ওই দিনই টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডে লিখিত আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ট্রাকসহ সারগুলো জব্দ করার নির্দেশ দেয়। ২১ মার্চ টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি যশোরে এসে জব্দকৃত সারের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামের সার কারখানার পরীক্ষাগারে নিয়ে যান।

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন টিএসপির উপ-প্রধান রসায়নবিদ রেজাউল ইসলাম। অন্য দু’জন হলেন উপপ্রধান হিসাব রক্ষক নির্মল কুমার দত্ত ও ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) শফিকুল ইসলাম।

মামলার বাদী টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ডিলাররা সারে ভেজাল দিয়ে ও আত্মসাৎ করে বিসিআইসির সঙ্গে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে আত্মসাৎকৃত সারের মূল্য বাবদ এক কোটি ৮৫ লাখ নব্বই হাজার টাকা আদায়ের মামলা করা
হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, টিএসপি থেকে সারে ভেজাল ও সার আত্মসাৎ নিয়ে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ মামলা পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেবে।

মিলন রহমান/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।