বরগুনায় স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ১২:০৩ এএম, ২৪ মার্চ ২০২২
ফাইল ছবি

 

বরগুনায় স্ত্রীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৩ মার্চ) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে বরগুনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্য অর্থ আদায় করে বাদীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহাঙ্গীর আলম বেতাগী উপজেলার তালগাছিয়া দেশান্তরকাঠী গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি পলাতক ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর আলমের শ্বশুর বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার সন্নাসী গ্রামের মজিবর রহমান ২০০৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বেতাগী থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।

মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, ১৯৮৭ সালে মেয়ে আসমা বেগমকে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে বিয়ে দেন। তাদের চারটি সন্তান রয়েছে। জাহাঙ্গীর যৌতুক লোভী হওয়ায় প্রায়ই তার মেয়েকে নির্যাতন করতেন। এছাড়া জাহাঙ্গীর একই গ্রামের এক বিধবা নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।

২০০৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীর ঘরের আড়ালে বসে ওই নারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তার স্ত্রী আসমা তা দেখে প্রতিবাদ করলে জাহাঙ্গীর চড়াও হন। ঘরের পেছনের বারান্দায় নিয়ে তাকে বেদম মারধর করে মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখম করেন। একপর্যায়ে ঘর থেকে কেরোসিন এনে আসমার কাপড় ও শরীরে তা ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আসমার ছোট মেয়ে এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। এই ফাঁকে জাহাঙ্গীর পালিয়ে যান।

আগুনে আসমার ডান বাহু, বুকের নিম্নভাগসহ শরীরের নিম্নাংশ পুড়ে যায়। তাকে প্রথমে বরিশাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০০৯ সালের ৫ মার্চ মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় মামলার পর তদন্ত করে এসআই জসিম উদ্দিন ওই বছরের ২০ জুন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. মো. নুরুল আমীন জাগো নিউজকে বলেন, আসামি আট বছর জেলহাজতে ছিল। হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে পলাতক হয়েছে। আপিল করতে হলে তাকে ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা দ্রুত আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

কাশেম হাওলাদার/ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।