গাবতলী শিক্ষা অফিস জ্বিনের বাদশার কবলে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বগুড়া
প্রকাশিত: ০১:৩৪ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬
প্রতীকী ছবি

ইব্রাহিম হোসেন একজন জ্বিনের বাদশা। বাড়ি গাবতলী উপজেলার বুরুজগ্রামে। বাবার নাম আব্দুস সামাদ প্রামাণিক। মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ আদায় ও ভয়ভীতি দেখানো তার কাজ। তবে ছদ্মবেশে তিনি শিক্ষকতার মহান পেশার মুখোশ ধরে রাখেন।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ভূলিগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি জ্বিনের বাদশার প্রতারণার মামলায় ২ বছর সাজা হলে ৫৪ দিন কারাগারে থাকার পর জামিনে বের হন তিনি। এরপর শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে কোনরুপ তদন্ত ছাড়াই পূর্বের মতো শিক্ষকতা পেশা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসেন আলী বলেন, ইব্রাহীম একজন প্রতারক ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সেটি আমার জানা নেই। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকেও জেলায় জানানো হয়নি। তবে এখন এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোবাইলে জ্বিনের বাদশা সেজে বিভিন্ন নিরীহ মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করায় ছিল ইব্রাহীমের মূল পেশা। আড়ালে সমাজের মানুষের কাছে তিনি নিজেকে শিক্ষক বলে পরিচয় দিতো। বিগত ২০০৭ সালে দিনাজপুরে জহুরা বেগম নামের একজন মহিলার কাছে থেকে জ্বিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে লক্ষাধিক টাকা ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ করে ইব্রাহীম।

এ ব্যাপারে পরবর্তী সময়ে মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্ত এই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এফ এম আহসানুল হক ইব্রাহীমকে দোষী সাব্যস্ত করে ২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে জেল হাজতে পাঠায়। দিনাজপুর কারাগারে ৫৪ দিন সাজা খাটার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বগুড়ার গাবতলী এলাকায় ফিরে আসেন তিনি। এরপর উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাজ্জাদ জাহিদের সঙ্গে যোগসাজস করে বেতন নিয়মিতকরণসহ বিদ্যালয়ে যোগ দেয়। স্কুলের ছাত্র ছাত্রী ও গ্রামের লোকজনকে ইব্রাহীম বলে যে আমি অসুস্থ ছিলাম এ জন্য স্কুলে আসিনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক ইব্রাহীম হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। এ কারণে আবার স্কুলে যোগ দিয়েছি। শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি জানেন।

ভুলিগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা নাহিদ সুলতানা জানান, ইব্রাহীম হোসেন স্কুলে অনুপস্থিতসহ তার প্রতারণার বিষয়গুলো যথা সময়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ জেলা শিক্ষা অফিস ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে অবহিত করা হয়েছে। তারা প্রতিটি বিষয় জানেন। তবে সাজা খেটে ইব্রাহীম আবার স্কুলে এসে যোগ দেয়ার চেষ্টা করছে।

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাজ্জাদ জাহীদ বলেন, প্রতারক হলে তার শাস্তি হবে। ইতোমধ্যেই এই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার বেতন নিয়মিতকরণের অভিযোগ সত্য নয়।

বাসার/এমএএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।