দল বেঁধে পলো বাওয়া উৎসবে মাতলেন ২ গ্রামের বাসিন্দারা
শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় এ সময়টাতে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলের কম পানিতে গিয়ে আশ্রয় নেয়। কিছুটা কম পানি হওয়ায় হাওর, বিল ও নদীতে পলো দিয়ে মাছ শিকারে আনন্দ পান সৌখিন লোকজন ও কৃষকরা। সিলেটে এটি আদি উৎসবগুলোর একটি।
প্রতি বছরের মতো এবারও সিলেটের জৈন্তাপুরের আনন্দ উচ্ছ্বাসে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসব পালিত হয়েছে। শনিবার (১২ মার্চ) উপজেলার হরিপুর-বালিপাড়া গ্রামবাসী মিলিত হয়ে বাড়ারডুয়ার বিলে মাছ ধরার এ উৎসবে মাতেন। পলো দিয়ে বিলে নামা বেশিরভাগই মানুষকে মাছ হাতে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।
দুপুরে দূর-দূরান্ত থেকে কয়েকশ’ মানুষ জড়ো হন বিলের ধারে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে শৌখিন মাছ শিকারিদের সঙ্গে উৎসুক দর্শকদের ভিড়। এক পর্যায়ে অনেকটা আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে পলো দিয়ে মাছ ধরতে বিলে নামেন শিকারিরা।
হাওরে গিয়ে দেখা যায়, পলোসহ মাছ ধরার নানা সরঞ্জাম নিয়ে বিলে নামেন শিকারিরা। এ সময় পলোতে আটকা পড়তে দেখা যায় দেশীয় প্রজাতির মাছের মধ্যে শোল, গজার, বোয়াল, রুই, কাতলাসহ অনেক প্রজাতির মাছ। উৎসবে অংশ নেওয়া অনেক শিকারিই মাছ ধরতে পেরে যেন আনন্দে আত্মহারা। তবে এর বিপরীত দৃশ্যও দেখা যায়। মাছ শিকারে ব্যর্থ হয়ে কেউ কেউ আবার ফেরেন খালি হাতে।
মাছ ধরতে বিলে যাওয়া হরিপুর গ্রামের আনোয়ার আলী জানান, প্রতি বছর এ বিলে মাছ ধরতে কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ আসে পলো দিয়ে মাছ শিকার করতে। এবার বেশিরভাগ শিকারিই বড় আকারের গোয়াল (বোয়াল) ও গজার মাছ ধরেছেন। তিনি নিজেও একটি রুই মাছ শিকার করেছেন। হাওরের মাছের স্বাদই আলাদা।
বালিপাড়া গ্রামের আবুল কালাম বলেন, হারিয়ে যেতে বসা সিলেটের ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসবকে ধরে রাখতে প্রতি বছর বাড়ারডুয়ার বিলে (হাওরে) এই উৎসব পালন করেন তারা। এছাড়া নদীতেও তারা পলো বাওয়া শিকার করেন সম্মিলিতভাবে।
ছামির মাহমুদ/এসজে/জেআইএম