পালিয়ে বাঁচলো অকথ্য নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা মিম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ০৬:২০ পিএম, ১১ মার্চ ২০২২
নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা মিম

বরিশাল নগরীর ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাতে মিম (১৭) নামের নির্যাতনের শিকার এক কিশোরী গৃহপরিচারিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল।

কাঁদতে দেখে ওই কিশোরীকে নিজের বাসায় নিয়ে যান আরিফ মোল্লা নামের এক রিকশাচালক। শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে তাকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন আরিফ মোল্লা।

পুলিশ জানিয়েছে, মিমের বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার তুলসিপুর খ্রিস্টান কলোনিতে। তার বাবার নাম অরেন, মা মনিকা। মিম যখন ছোট তখন তারা দুজনই মারা যান। এরপর চাচা স্বপন এবং চাচি স্বপ্নার কাছে সে বড় হয়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবসরপ্রাপ্ত মেজর আকিমুল ইসলাম বর্তমানে বরিশাল নগরীর কলেজ রো সড়কে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কেমিস্ট ল্যাবরেটরিজের চিফ অপারেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পদে কর্মরত আছেন। ওই রোডেই তার বাসা। সেখানেই গৃহপরিচারিকার কাজ করতো মিম।

মিম জানায়, শৈশবে তার মা-বাবা মারা গেছেন। এরপর চাচা-চাচির সংসারে থাকতো। সাত বছর আগে তাকে আকিমুল ইসলামের বাসায় কাজে দেওয়া হয়। কাজে সামান্য ভুল করলে তাকে মারধর করা হতো। ঠিকমতো খাবার দেওয়া হতো না। বাসার মধ্যে আটকে রেখে প্রায় দিনই তাকে মারধর করা হতো। গলা টিপে ধরা হতো। আকিমুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শিমু আক্তার দুজনই তাকে মারধর করতেন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে দাগ পড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার ওই বাসায় টিভি সারানোর মেকানিক আসেন। ওই সময় সুযোগে পেয়ে সে পালিয়ে আসে।

তবে নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর আকিমুল ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মিম যেসব অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। সে মানসিক ভারসাম্যহীন। তার কাজে কোনো মন ছিল না। তাকে বারবার বলেও কোনো কাজ করানো যেতো না। আমার সন্তানদের সঙ্গে সে খারাপ আচরণ করতো। কয়েকবার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেছিল মেয়েটি। গতকাল সে পালাতে সক্ষম হয়। পালিয়ে গিয়ে এখন মারধরসহ নানা মিথ্যা কথা বলছে।’

মিমকে নিজের বাসায় নিয়ে যাওয়া রিকশাচালক আরিফ মোল্লা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মেয়েটি সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। তিনি কাছে গেলে বাঁচানোর আকুতি জানায়। পরে তাকে নিজের বাসায় নিয়ে যান।’

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, ‘মিমের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মিমকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

সাইফ আমীন/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।