হস্তান্তরের আগেই ঠাকুরগাঁওয়ে মডেল মসজিদে ফাটল
অডিও শুনুন
দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় এগিয়ে চলছে মডেল মসজিদ নির্মাণের কাজ। তারই অংশ হিসেবে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে মডেল মসজিদ। তবে কমিটির কাছে হস্তান্তরের আগেই মসজিদটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ২০১৯ সালের আগস্টের দিকে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায় প্রায় ৪৩ শতক জমিতে কাজ শুরু হয় এই মডেল মসজিদ নির্মাণের। ২০২১ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে নির্মিত ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র একযোগে উদ্বোধন করেন। সেদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আধুনিক ও সুসজ্জিত এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রোগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় উদ্বোধন করা হয় ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলার এই মডেল মসজিদটি। তবে এখনো কিছু কাজ বাকি থাকায় মসজিদটি কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়নি।
কাজ শেষ না হতেই মসজিদের বিভিন্ন দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে এটা তেমন কোনো বিষয় নয়।
প্রায় ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আগামী দু’এক মাসের মধ্যে মসজিদটি হস্তান্তরের কথা রয়েছে কমিটির কাছে। এরই মধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি মসজিদ কমিটি ও স্থানীয়রা দেয়ালে ফাটল দেখতে পান। তিনতলা বিশিষ্ট এই মসজিদের বিভিন্ন স্থানে দেয়ালের মধ্যে ফাটল ধরেছে। যাতে আতঙ্কে রয়েছেন সকলেই।
যদিও এখনো এই মসজিদে নামাজ পড়া শুরু হয়নি এরপরও মুসল্লিরা রয়েছেন আতঙ্কে। অনেকে বলছেন কাজের মান খারাপের কারণেই এমনটি হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, উদ্বোধন হওয়ার আট মাসের মধ্যে মডেল মসজিদটিতে ফাটল ধরার কারণে আমরা আতঙ্কে আছি।
সফিকুল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, আমরা এখনও এই মসজিদে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারিনি। আর এখনই দেখা যাচ্ছে মসজিদের বিভিন্ন অংশে ফাটল।
হরিপুরের মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পেশ ইমাম মুফতি মাসুদুর রহমান বলেন, একসঙ্গে বাংলাদেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে এটি প্রশংসনীয়। ইসলামের জন্য যা কিছু কল্যাণকর ইসলামিক সভ্যতা, ইসলামিক সংস্কৃতি অর্থাৎ ইসলাম শেখার জন্য যা কিছু দরকার সবকিছুই এখানে থাকছে। অথচ এই ভবনটিতে ফাটল ধরেছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার খায়রুল কবির রানাকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ব্যস্ততার কথা বলে সংযোগটি কেটে দেন তিনি।
তবে ঠাকুরগাঁও গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) এমকেএম নুরুল হাসান বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখেছি মসজিদের বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরেছে। এটি নিয়ে জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই ভবনটির দায়িত্বে যেহেতু আমরা আছি অবশ্যই বিষয়টি আমরা দেখব। সুন্দরভাবে মসজিদটির কাজ সম্পন্ন করে হস্তান্তর করা হবে।
হরিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, আমি অভিযোগটি মৌখিকভাবে শুনেছি। নিজে গিয়ে একবার পরিদর্শন করবো। যেহেতু মসজিদটি এখনও হস্তান্তর করা হয়নি, সেক্ষেত্রে গণপূর্ত বিভাগ তাদের ছোটখাটো ত্রুটিগুলো মেরামত করে আমাদেরকে ভবনটি হস্তান্তর করবে। কোনো অপ্রীতিকর অবস্থায় যেন আমাদেরকে পড়তে না হয় সেটি গণপূর্ত বিভাগ দেখবে বলে শুনেছি।
তানভীর হাসান তানু/এফএ/এমএস