এইচএসসিতেও উপজেলায় একমাত্র জিপিএ-৫ শারীরিক প্রতিবন্ধী দীপার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ০৭:০১ পিএম, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
শারীরিক প্রতিবন্ধী দীপা নন্দী

খাগড়াছড়ির পানছড়ির শারীরিক প্রতিবন্ধী দীপা নন্দী। এসএসসি পরীক্ষায় পানছড়ি উপজেলাকে একমাত্র জিপিএ-৫ উপহার দিয়েছিলেন। পিইসি এবং জেএসসি পরীক্ষাতেও তার ঝুলিতে জমা পড়েছিল জিপিএ-৫। এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ফের ঈর্ষান্বিত সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আর অভাব যেন কোনোভাবেই দমাতে পারেনি তাকে। প্রতিবন্ধীত্বের বাধা পেরিয়ে আবারো বাজিমাৎ করেছেন অদম্য মেধাবী দীপা নন্দী। পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজের ব্যবসা শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে উপজেলায় এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পাওয়া একমাত্র শিক্ষার্থী দীপা নন্দী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী দীপা নন্দীর মা মানসিক ভারসাম্যহীন। জন্মদাতা বাবা থেকেও না থাকার মতো। রাখেন না কোনো খোঁজখবর। ছোটবেলা থেকেই মামা-মামির অভাবের সংসারে বড় হয়েছেন। তাদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহে এ পর্যন্ত এসেছেন দীপা। সব বাধা ঠেলে স্বপ্নের পথ ধরেই ছুটে চলেছেন তিনি। অভাব থাকলেও চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। আর অধ্যবসায়ের ফলে বারবার ঈর্ষান্বিত সাফল্যও পেয়েছেন অদম্য এ শিক্ষার্থী।

দীপা নন্দীর এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তার মামি চুমকি বিশ্বাস বলেন, অদম্য অভিপ্রায় আর কঠোর অধ্যবসায়ই দীপার সাফল্যের নেপথ্য রহস্য। কিন্তু ভালো ফলাফলের পর হতাশা বেড়েছে। যেখানে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা সেখানে তাকে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো সামর্থ্য আমাদের কোথায়।

jagonews24

শারীরিক প্রতিবন্ধী দীপা নন্দী

তবে দীপাকে ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য বিত্তবানদের পাশে চান চুমকি বিশ্বাস।

কারও সহায়তা ছাড়া দীপার স্বপ্ন অধরাই রয়ে যাবে এমন শঙ্কা প্রকাশ করে মামা সঞ্জয় দাশ বলেন, স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে দীপা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পা বাড়াবে। দীপার ইচ্ছে ব্যাংকার হওয়ার। তবে তার স্বপ্ন পূরণে বড় বাধা আর্থিক অনটন।

পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, দীপা নন্দী অত্যন্ত মেধাবী। শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও অত্যন্ত পরিশ্রমী। অদম্য ইচ্ছা শক্তি আর অধ্যবসায়ের ফলে সে বারবার সাফল্য ছুঁয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

দীপার উচ্চ শিক্ষার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন জেলা প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘দীপার এমন সাফল্য একইসঙ্গে আনন্দের, অনুকরণীয় এবং ঈর্ষান্বিত। সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে সে। আমরা সবসময় তার পাশে থাকবো।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এসজে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।