নারায়ণগঞ্জে গ্যাসের তীব্র সংকট : বৃহস্পতিবার থেকে রান্না বন্ধ
নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকাতে জ্বালানি গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে শিল্প কারখানাসহ আবাসিকে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে রান্নার কাজে নারীরা পড়ছেন বিপাকে।
বুধবার থেকে এই সংকট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। সকল স্তরের মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। আর বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার গ্যাসের সংকট তীব্র হওয়ায় শহরের রেস্তোরা গুলোয় বেড়েছে লোকের ভিড়। সেখানেও গ্যাসের সংকট থাকায় লাকড়ি ও এলপি গ্যাসের ওপর পড়েছে বাড়তি চাপ।
এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানি নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (কৌশলী) শফিকুর রহমানের সঙ্গে আলোচনার উদ্বৃত্তি দিয়ে বলেন, শহরে গ্যাস সংকটের খবর পেয়ে আমি তিতাস গ্যাসের নারায়ণগঞ্জ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিতাস গ্যাসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গ্যাসের পাইপ লাইনে ময়লা জমাট হয়েছে। যা পরিস্কার করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন স্থানে খনন করে পাইপের ময়লা পরিস্কার করতে হচ্ছে।
তিতাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে। আপাতত এটাই সত্য যে প্রাকৃতিক কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
ফতুল্লার আমতলার নাজনীন সুলতানা বলেন, বুধবার থেকে গ্যাস সমস্যা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে একেবারেই গ্যাস নাই। জানতে পেরেছি লাইন সারাতে দুইদিন লাগবে। এটা প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার ছিল। বিশেষ করে শীতের সময় এটা বেশ কষ্টকর অভিজ্ঞতা। আর সকালে স্বামীসহ সন্তানকে নাস্তাসহ দুপুরের খাবার তৈরি করতে পারিনি। সকালে হোটেল থেকে কিনে এনে সময় পাড় করলেও দুপুর আর রাতের খাবার তৈরি করতে পারিনি।
শহরের গলাচিপা এলাকার অধিবাসী লাবনী বেগম বলেন, বুধবার দুপুর থেকেই গ্যাসের সংকট শুরু হয়েছে। বিকেলের পর তো সংকট প্রকট রূপ নিয়েছে। গ্যাসের সমস্যার কারণে রান্না করতে পারছি না।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা, নিতাইগঞ্জ, ডনচেম্বার, বাবুরাইল, পাইকপাড়া, শহীদনগর, নলুয়াপাড়া, ফতুল্লার কাশিপুর, হরিহরপাড়া, ভূঁইয়ারবাগ, দেওভোগ, চাঁদমারী, ইসদাইর, মাসদাইর, পশ্চিম মাসদাইর, জামতলা, দাতা সড়ক প্রভৃতি এলাকায় গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে করে আবাসিক বাসা বাড়িতে রান্নার কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
তিতাস গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন অ্যান্ড ট্রান্সমিশন কোম্পানি নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (কৌশলী) শফিকুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বাখরাবাদ থেকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ পর্যন্ত সঞ্চালনের মূল লাইনে ময়লা জমে থাকার কারণে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে।
মহাব্যবস্থাপক (প্রকৌশলী) আরও বলেন, আমাদের প্রকৌশলীরা কাজ শুরু করেছে। আশা করছি পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
শাহাদাত হোসেন/এমএএস/পিআর