ডাকাতিয়ায় ৫ মৃত্যু: বাল্কহেডকেই দুষছে সবাই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁদপুর
প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২২

চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীতে বালুবাহী বাল্কহেড ও ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় সদর উপজেলার মমিনপুর নামক স্থানে ডাকাতিয়া নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরের শিলিগুড়ি এলাকার বাসিন্দা মো. আওয়াল (৫০), সাহাপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মোবারক (৪৫), মাধবপুর এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন (৩৫), মো. নাসির (৩২) ও কুমিল্লা জেলার তিতাস এলাকার রঘুনাথপুরের বাসিন্দা নজরুল (৩৫)। এছাড়া ট্রলারে থাকা আরও ছয়জন সাঁতরে নদী তীরে উঠতে সক্ষম হন।

এদিকে ঘন কুয়াশায় বাল্কহেড চলাচলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী। নৌপথে রাতে ও ঘন কুয়াশায় বাল্কহেড চলাচলের ওপর বিআইডব্লিউটিএ থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ মালিক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই প্রতিনিয়ত চাঁদপুরের বিভিন্ন নৌপথে চালাচ্ছেন তাদের নৌযান। এতে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

সর্বশেষ আজ চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীর মমিনপুরের দুর্ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি, নৌপথে এসব বাল্কহেড চলাচল বন্ধ না করা হলে আরও দুর্ঘটনার শিকার হবে সাধারণ মানুষ।

স্থানীরা জানান, গভীর রাতে এসব বাল্কহেড নদীপথে বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করে। এতে অনেক সময় নদীতে স্থানীয় জেলেরা দুর্ঘটনার শিকার হন। অনেক সময় নদীতে ছোট ছোট নৌকা দিয়ে মাছ ধরার সময় ওইসব বাল্কহেড তাদের নৌকার ওপর উঠে যায় বলেও দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে স্থানীয় ৮নং বাঘাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল জানান, নৌপথের দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন। ঘন কুয়াশায় বাল্কহেড চলাচলের কারণে ৫টি তাজা প্রাণ চলে গেলো। আমি যতটুকু জানি এসব বাক্লহেড রাতের বেলা বা ঘন কুয়াশায় চলাচলের অনুমতি নেই। তারপরও তারা কিভাবে চলে তা জানি না। তবে এ বিষয়ে প্রশাসনের আরো কঠোর নজরদারির প্রয়োজন।

বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. রেজাউল করিম জানান, নৌপথে চলাচলকারী বেশিরভাগ বাল্কহেড নির্ধারিত কোনো গ্রেডের মাস্টার বা ড্রাইভার ছাড়াই চলাচল করছে। রাতে এবং ঘন কুয়াশায় যাতে তারা চলাচল না করে সে বিষয়ে নৌপুলিশ, জেলা প্রশাসন ও কোস্টগার্ডের নিকট চিঠি ইস্যু করেছি। কিন্তু তারপরও কিছু অসাধু বাল্কহেড ব্যবসায়ী তাদের এমন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আর এতেই এসব দুর্ঘটনা ঘটছে।

নৌ পুলিশের এসপি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, নৌপথের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে নৌ-পুলিশ। তবে তার মধ্যেও কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এমন কার্যক্রম চালাচ্ছেন। যার কারণে সংগঠিত হচ্ছে এমন দুর্ঘটনা।

তিনি জানান, এই দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে বালুবাহী বাল্কহেড জব্দ করেছে পুলিশ। এছাড়াও বাল্কহেডের গ্রিজার ম্যান ইউনুস মিয়া ও সুকানীসহ মোট চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হবে। তাহলেই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

নজরুল ইসলাম আতিক/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।