২১ গ্রামের মানুষের ভরসা নড়বড়ে এক বাঁশের সাঁকো

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বরগুনা
প্রকাশিত: ০৫:১১ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২২
প্রতি বছরই সংস্কার হয় খালের ওপর নির্মিত সাঁকোটি

একটি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোই ভরসা বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার ২১ গ্রামের বাসিন্দাদের। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, আমতলীর আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চরকগাছিয়া এবং তালতলীর পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নে কলারং গ্রামে বয়ে চলা খালের ওপর নির্মিত হয় সাঁকোটি। চরকগাছিয়া, পচাকোড়ালিয়া, কলারং, আড়পাঙ্গাশিয়া, ঘোপখালী, চান্দখালীসহ আশপাশের ২১ গ্রামের মানুষের শহরের সঙ্গে যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম সেটি। এতে করে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নারী-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সীদের। এক সময় নৌকায় পারাপারের ব্যবস্থা থাকলেও ২৫ বছর আগে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে প্রতি বছর সাঁকোটি স্থানীয়রা মেরামত করে আসছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পেরিয়ে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসায় যাতায়াত করছে। সাঁকো পার হয়েই প্রতিদিন কলারং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চড়কগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চড়কগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাহলান বাড়ি কওমি মাদরাসা এবং শহিদুল ইসলাম কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থীকে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়াও ভোগান্তি পোহাতে স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য পেশার মানুষদের।

কলারং গ্রামের কৃষক আখতার হোসেন বলেন, খালের ওপারে আমার জমি। চাষাবাদের জন্য রোজ সাঁকো পার হয়ে জমিতে আসা যাওয়া করতে হয়। গত শীতে খড়ের আটি নিয়ে সাঁকো পারাপারের সময় দুই বাঁশের ফাকে পা আটকে গিয়েছিলো। আল্লাহ সহায় ছিল বলে পা ভাঙেনি।

চরকগাছিয়া গ্রামের খলিল মৃধা বলেন, ছোট বেলা থেকেই এখানে সাঁকো দেখে আসছি। গ্রামবাসী খুব কষ্টে এ সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে। বেশি কষ্ট হয় অসুস্থ, বয়স্ক ও গর্ভবতীদের। এখানে ব্রিজ নির্মাণ হলে আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজন উপকৃত হবে।

কলারং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, খালের দুপাশে দুই উপজেলা হওয়ায় ব্রিজ নির্মাণে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের কথা ভেবে দ্রুত এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

তালতলীর উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাফর মিয়া বলেন, সাঁকোটি আমি পরিদর্শন করেছি। তালতলী ও আমতলীর বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ সাঁকোর ওপর নির্ভরশীল। দ্রুত এ সেতুটি নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হবে।

আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেলি পারভীন বলেন, আমার স্বামী চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময় এ স্থানে ব্রিজ নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেটা এখন কী অবস্থায় আছে খোঁজ নিয়ে দেখব।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাঁশের সাঁকোর বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। এ গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথাও কেউ কখনও বলেনি আমাকে। আমি ওখানকার ইউপি চেয়ারম্যানদের এলজিইডিতে আবেদন করতে বলব। আমিও চেষ্টা করব যাতে ওখানে একটি ব্রিজ হয়।

আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।