ঢেঁকির দেখা মেলা ভার
ঢেঁকি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি অনুষঙ্গের নাম। বহুকাল থেকে এটি সমাজ-সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। তবে, আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে চিরায়ত বাংলার এ উপকরণটি।
উত্তরের জনপদ গাইবান্ধায় শীতকালে দেখা মেলে ঢেঁকির। শীতে জামাই পিঠা বানাতে উপকরণটির প্রয়োজন হয় বলে এখনো কারো কারো বাড়িতে ঢেঁকির সন্ধান পাওয়া যায়। এ সময় ব্যস্ত সময় পার করেন সেখানকার নারীরা।
জেলার সাঘাটা উপজেলার গাছাবাড়ি গ্রামের লাকি বেগম বলেন, ‘মেয়ে জামাইকে পিঠার দাওয়াত দিতে হবে সেজন্য ঢেঁকিতে আটা তৈরি করছি। পিঠা তৈরির পর জামাই ও তার স্বজনদের দাওয়াত দিবো। তাদের জন্য পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, তৈল ভাজা পিঠা ও জামাই পিঠা তৈরি করবো।’
একই গ্রামের রেজাউল করিম জানান, ‘আমার বাড়িতে একটি ঢেঁকি আছে। এ ঢেঁকিতে গ্রামের মহিলারা প্রায় প্রতিদিন চাল গুড়া করেন।’
হাটবাড়ি গ্রামের নুরী বেগম জানান, ‘শীতের পিঠার স্বাদ আলাদা। প্রতি বছর শীতে পিঠা তৈরি করি। বাজার থেকে যেসব চালের আটা কিনতে পাওয়া যায় তার স্বাদ কম লাগে তাই আমরা ঢেঁকিতে চাল থেকে আটা করি।’
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুক সোনাই ডাঙ্গা গ্রামের রাবেয়া বেগম জানান, ‘ঢেঁকিতে চাল থেকে আটা তৈরি করি। ঢেঁকির তৈরি আটার পিঠার স্বাদ ভালো হয়। মেশিনের তৈরি আটার পিঠা তেমন ফোলে না। স্বাদও কম।’
স্থানীয় কৃষি গবেষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনেক আগ থেকে ঢেঁকির প্রচলন ছিল। আধুনিক যন্ত্রের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের ঢেঁকি।’
জাহিদ খন্দকার/আরএইচ/এমএস