ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর স্তন কর্তন


প্রকাশিত: ০৩:০৮ এএম, ০৫ জানুয়ারি ২০১৬

ভুল চিকিৎসায় এক গৃহবধূর স্তন কেটে ফেলার অভিযোগে শেরপুরের শ্রীবরদীতে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার ডা. শরীফুল ইসলাম শরীফ ও ময়মনসিংহের কুন্ডু প্যাথলজির মালিক অধ্যাপক ডা. কে.কে. কুন্ডুর বিরুদ্ধে ওই গ্রহবধুর স্বামীর দায়ের করা মামলাটি শ্রীবরদী থানায় রেকর্ড করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের ভুতনীপাড়া গ্রামের দুই সন্তানের জননী গৃহবধূর স্তনের ফোঁড়াকে টিউমার বলে ভয় দেখিয়ে রোগীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে স্তন কেটে ফেলেছেন চিকিৎসক ডা. শরীফুল ইসলাম শরীফ। ওই চিকিৎসক শ্রীবরদী উপজেলার লঙ্গরপাড়া গ্রামের মৃত কছর আলীর ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও  প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে কর্মরত রয়েছেন।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে শেরপুরের শ্রীবরদী শহরের শান ক্লিনিকে চিকিৎসক শরীফকে স্তনের ফোঁড়া দেখাতে যান ওই গৃহবধূ। এসময় চিকিৎসক তার স্তনে টিউমার হয়েছে বলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে ময়মনসিংহের সেহরা এলাকার কুন্ডু প্যাথলজিতে পাঠান। সেখানে পরীক্ষায় ফোঁড়াকে টিউমার চি‎হ্নিত করে তাতে ক্যান্সার রয়েছে বলে রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়। চিকিৎসক শরীফ ১১ নভেম্বর রোগীর স্বামী সোলাইমান মিয়ার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ঢাকার উত্তরার আব্দুল্লাহপুর এলাকার আইচি ক্লিনিকে ভর্তি করান।

সেখান থেকে গৃহবধূকে শাহবাগের মডিউল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ১৫ নভেম্বর তার বাম স্তন কেটে ফেলেন। এসময় রোগীর স্বামীর কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নেয়া হয়। পরে বায়োপসি করার জন্য প্রথমে ধানমন্ডির আনোয়ারা মেডিকেল সার্ভিসেস ও পরে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হলে সেখান থেকে জানানে হয়, স্তনে কোনো ক্যান্সার নেই। পরে গৃহবধূর স্বামী চিকিৎসক শরীফের শরণাপন্ন হলে তিনি বলেন, ভুল চিকিৎসা হয়েছে, আমি প্লাস্টিক সার্জারি করে বিকল্প স্তন লাগিয়ে দেবো।

এ ঘটনায় গত ২৯ ডিসেম্বর শেরপুরের সিআর আমলী আদালতে দুই চিকিৎসককে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন গৃহবধূর স্বামী সোলাইমান মিয়া। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শ্রীবরদী থানার ওসিকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেন। ৪ জানুয়ারি সোমবার মামলাটি শ্রীবরদী থানায় রেকর্ড করা হয়।

মামলার বাদী সোলায়মান মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, আমি এর বিচার চাই। আর যেন কাউকে কসাইরূপি এমন চিকিৎসকদের ফাঁদে পড়ে ভুগতে না হয়, তার জন্য তাদের উপযুক্ত সাজা চাই।

এ ব্যাপারে চিকিৎসক শরীফুল ইসলাম শরীফে সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। বার বার ফোন দেয়ার একপর্যায়ে তিনি ফোনটি বন্ধ করে দেন।

মামলা রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীবরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মো. আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হাকিম বাবুল/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।