২৭ বছর পরও কবরে ‘অক্ষত’ মরদেহ!
কুষ্টিয়ার মিরপুরে দাফনের ২৭ বছর পর মঞ্জুর মল্লিক নামে এক ব্যক্তির ‘অক্ষত’ মরদেহ শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকালে মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের মাজিহাট খাঁ পাড়া গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনরা জানান, প্রায় ২৭ বছর আগে মঞ্জুর মল্লিক ৭০ বছর বয়সে মারা গেলে তাকে বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে মৃত ওই ব্যক্তির ছেলে আবুল হোসেন কবরস্থানের পাশে ঘর নির্মাণের জন্য শ্রমিক দিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করলে এক সময় তার বাবার দাফন করা ‘অক্ষত’ মরদেহ বের হয়ে আসে।
মৃত মনজুর মল্লিকের ছেলে ছালামত জানান, প্রায় ২৭ বছর আগে তার বাবার স্বাভাবিক মৃত্যু হলে ওই জায়গায় দাফন করা হয়। কবরের পাশে বাড়ি নির্মাণের জন্য মাটি খুঁড়তে গেলে মরদেহটি বের হয়ে আসে। দেখা যায়, মরদেহের কোনো পরিবর্তন হয়নি, ‘অক্ষত’ অবস্থায় রয়ে গেছে। এমনকি কাফনের কাপড়েরও কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বিষয়টি জানার পর দূর-দূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ওই এলাকায় ভিড় করছে।
এলাকাবাসী জানান, মঞ্জুর মল্লিক একজন খুবই ধার্মিক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন এবং আওলাদে রাসুল সা. হযরত আবেদ সাহার খেদমত করতেন। তিনি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। এমনকি তাহাজ্জুদ নামাজও পড়তেন। ইসলামিক সব বিধিবিধান খুব ভালোভাবে মেনে চলতেন। মৃত্যুর পর তাকে বাড়ির সঙ্গেই লাগানো পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মৃত ব্যক্তির ছেলে নতুন ঘর নির্মাণের জন্য মাটি কাটছিল। এ সময় তার বাবার দাফনের প্রায় ২৭ বছর আগের মরদেহটি কাফনসহ শনাক্ত হয়। পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্য জায়গায় মরদেহটি দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে মেডিকেল সায়েন্সের ব্যাখ্যা কি হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সালেক মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, যেসব এলাকায় নিয়মিত তুষারপাত হয়, তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে বা মাইনাস তাপমাত্রা থাকে সেসব এলাকায় মরদেহ দীর্ঘদিন পরও এমন অক্ষত থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। মেডিকেল সায়েন্স দ্বারা এটির ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভবপর নয়। বলা যায় ২৭ বছর পরও মরদেহ এভাবে অক্ষত থাকার বিষয়টি একটি মিরাকেল ঘটনা।
আল-মামুন সাগর/এসজে/এমএস