নেচে-গেয়ে নতুন বছরকে বরণ করলেন লাখো পর্যটক
থার্টি ফার্স্ট নাইটে উন্মুক্ত কোনো জায়গায় বিশেষ আয়োজন ছিল না কক্সবাজারে। তবে নিজেদের মতো করে ২০২১ সালকে বিদায় ও নতুন বছর ২০২২ সালকে বরণ করে নিয়েছেন সৈকতে বেড়াতে আসা লাখো পর্যটক।
জমজমাট ইনডোর প্রোগ্রামে বর্ষবরণ করেছে তারকা হোটেলগুলো। গভীর রাত পর্যন্ত আনন্দ আর নেচে-গেয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান হোটেলে অবস্থান করা অসংখ্য পর্যটক। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় হোটেল ও রাতের সৈকতে নিজ উদ্যোগে আতশবাজি, ফানুস উড়িয়ে সাউন্ড বক্সে গান বাজিয়ে উন্মাদনায় ফেটে পড়েন পর্যটক ও স্থানীয়রা।
৩১ ডিসেম্বর রাতে সমুদ্রসৈকত ও তারকা হোটেলগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। আগে থেকেই তারকা হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো সাজানো হয় বর্ণিল সাজে। আয়োজন করা হয় সুস্বাদু খাবারের নানা পদ, ফ্যামিলি নাইট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইসে রাত ৮টার পর থেকেই শুরু হয় বছরের শেষদিনের উদযাপন। আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য রাখা হয় বিভিন্ন পদের খাবার ও পানীয়।
একই রকম আয়োজন করে সৈকতের অভিজাত হোটেল সায়মন বিচ রিসোর্ট, সি-গাল, কক্স টু ডে, লং বিচ, সি-ওয়ার্ল্ড, সি-প্যালেস, সি পার্ল হোটেলসহ অন্য একাধিক হোটেল। এছাড়া পর্যটন স্পট দরিয়ানগর, ইনানীর ইকো রিসোর্টসহ শহরের বাইরে বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করা হয়।
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন করতে আগে থেকে কক্সবাজার এসে অবস্থান নেয় লক্ষাধিক পর্যটক। শহরের হোটেল-রেস্তোরাঁ, রাস্তাঘাট ও বিপণিকেন্দ্রে দেখা দেয় প্রচণ্ড ভিড়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্লাব, সমিতি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের দলবেঁধে আসা এসব পর্যটকের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে সৈকতের বালিয়াড়ি ও হোটেল-মোটেল জোন। পর্যটকদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় তরুণ-তরুণীরাও।
সৈকত ও আশপাশের এলাকা আলোকসজ্জার পাশাপাশি আয়োজন করা হয় নানা অনুষ্ঠানের। পর্যটকরা সৈকত ছাড়াও প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ, ইনানী, হিমছড়ি, রামু, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, মহেশখালী, সোনাদিয়াসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কক্সবাজার ছাড়িয়ে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনেও।
কুমিল্লার চান্দিনা থেকে বেড়াতে এসে ওশান প্যারাডাইস হোটেলে অবস্থান করা তারেক মাহমুদ দম্পতি জাগো নিউজকে বলেন, ‘হানিমুনে এসে নতুন বছর বরণে সঙ্গী হলাম আমরা। ওশান প্যারাডাইস জমজমাট আয়োজনে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করে দেয়। কোনো উচ্চবাচ্য ছাড়ায় নেচে-গেয়ে রাত ২টা পর্যন্ত আনন্দ করেছি হোটেলে অবস্থান করা পর্যটকরা। আমাদের সঙ্গে যোগ দেন বিদেশিরাও।’
ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, অনুষ্ঠান না থাকলেও আমাদের ধারণা ছিল নতুন বছর বরণে লক্ষাধিক পর্যটক সমাগম হবে কক্সবাজারে। হয়েছেও তাই। কলাতলী থেকে লাবণী পয়েন্ট সব জায়গা রাত ২টা পর্যন্ত লোকারণ্য ছিল। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য বিভাগও সজাগ ছিল।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, সবার আন্তরিক সহযোগিতায় কক্সবাজারে সুন্দরভাবে বর্ষবরণ হয়েছে। সৈকতে পর্যটকসহ স্থানীয়রা গভীর রাত পর্যন্ত নিজেদের মতো করে আড্ডা-গানে সময় কাটান।
সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এএসএম