টেকনোলজিস্ট হত্যাকারীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৫:৫৮ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল ও ইনসেটে টেকনোলজিস্ট সাইফুল ইসলাম

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট (ল্যাব টেকেনোশিয়ান) সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সিলেট বিভাগজুড়ে ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগ বাদে সবধরনের সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ দুপুরে ছুটে আসেন সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায়। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তিনি। অন্যথায় সিলেট বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।

ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, দিনদুপুরে শহরের প্রধান সড়কে মানুষের সামনে এমন ঘটনায় আমরা হতভম্ব। মাত্র দেড় বছর আগে তিনি চাকরিতে যোগদান করেছেন। এরকম একটি তরতাজা ছেলেকে হত্যা করেছে। যে কি না করোনার সময় জেলাবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছে, সহযোগিতা করেছে। এ হত্যাকাণ্ডে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজ এ কর্মসূচি থেকে করছি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করবো। এ সময় পর্যন্ত আমরা এ হাসপাতালে শুধু জরুরি সেবাগুলো চালু রাখবো। যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের ধরতে ব্যর্থ হন তবে পুরো সিলেট বিভাগে সব ধরেন স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম আমরা বন্ধ করে দেবো। কারণ, আমরা দেখছি পুরো দেশজুড়ে বারবার একই ঘটনা ঘটছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি নিরাপত্তা না পায় তবে জনগণকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য আমরা আর অপেক্ষা করবো না।

স্বাস্থ্য বিভাগের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করতে এসে জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. মুশফিক হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রকাশ্যে এমন নির্মম ঘটনা আমাদের মারাত্মকভাবে মর্মাহত করেছে। এ ঘটনাটি কেউ মেনে নিতে পারেনি। সবার একটি প্রশ্ন, এমন নিরীহ একজনকে কেন এভাবে প্রাণ দিতে হলো। স্বাস্থ্য বিভাগের সবাই একত্রিত হয়ে অত্যন্ত উত্তেজিতভাবে আন্দোলন শুরু করেছেন। আমি তাদের সব আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করছি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। এরই মধ্যে সিসিটিভির কিছু ফুটেজও সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, কিছু তথ্য এরই মধ্যে পেয়েছি। তদন্তও এগোচ্ছে। এ বিষয়ে এখনো মামলা হয়নি। তবে তা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে শহরের প্রধান সড়কের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা টাউন রোডে হবিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তায় সদর আধুনিক হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সাইফুল ইসলামের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। লাঠিসোটা নিয়ে তাকে বেদম মারধর করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে এবং পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে মারা যান।

সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।