প্রসূতির সমস্যা দেখলেই ফিরিয়ে দেয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

জুয়েল সাহা বিকাশ
জুয়েল সাহা বিকাশ জুয়েল সাহা বিকাশ , জেলা প্রতিনিধি, ভোলা
প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১

প্রায় দেড় লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ডাক্তার, নার্স, টেকনিক্যাল স্টাফ ও প্রায়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্কটের কারণে প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। তবে সবচেয়ে বেশি বেহাল দশা প্রসূতিসেবায়। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হয় হাসপাতালে আসা প্রসূতিদের।

মনপুরা উপজেলার হাজির হাট এলাকার বাসিন্দা মো. মাইনউদ্দিন জানান, মনপুরা উপজেলার বেশি ভাগ মানুষের আয়ের উৎস মৎস্য শিকার ও ব্যবসা। ফলে অর্থনৈকিভাবে খুবই দুর্বল উপজেলার বেশিভাগ মানুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও প্রসূতিদের ডেলিভারি নিয়ে পড়তে হয় চরম বিপাকে। ডাক্তার, নার্স ও টেকনিক্যাল স্টাফ সঙ্কটের কারণে নরমাল ডেলিভারির জন্য প্রসূতিদের নিয়ে গেলে পড়তে হয় বিপাকে। কারণ প্রায়োজনীয় লোকবল ও সরঞ্জাম না থাকায় ঝুঁকি নিতে চান না চিকিৎসকরা।

তিনি আরও জানান, কোনো প্রসূতির সব কন্ডিশন ঠিক থাকলেই কেবল এখানে ডেলিভারি করানো হয়। তবে যদি প্রসূতির একটু সমস্যা মনে হয় তাহলে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

jagonews24

হাজিরহাট ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চর জতিন গ্রামের মো. হিরণ ফরাজী জানান, মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা নরমাল ডেলিভারি সম্ভব মনে করলেই কেবল ভর্তি নেন। আর যদি সিজারের প্রায়োজন মনে করেন তাহলে ভোলা সদরে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু ভোলা সদরে যাওয়ার জন্য সকালে সি সার্ভিস থাকলেও বিকেল কিংবা রাতে কোনো পরিবহন নেই। ফলে কোনো রোগীকে বিকেল বা রাতে ভোলায় নিতে হলে স্পিডবোট ভাড়া করতে হয়।

তিনি আরও জানান, নিম্ন আয়ের একটি পরিবারের পক্ষে ৩-৪ হাজার টাকা খরচ করে স্পিডবোট ভাড়া নিয়ে ভোলায় নেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে অনেক সময় সেবার অভাবে রোগী মারা যায়।

মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, হাসপাতালে পদ ১০টি থাকলেও চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র দুইজন। আর নার্সের ২৫টি পদ থাকলেও রয়েছেন ছয়জন। এছাড়া টেকনিক্যাল স্টাফের ছয় পদে একজনও কর্মরত নেই।

jagonews24

মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌয়বুর রহমান চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিক্যাল স্টাফ সংঙ্কটের কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে জানান, নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে গুরুত্ব সহকারে করানো হয়। প্রতিমাসে ২০-২৫টি নরমাল ডেলিভারি হয়। কিন্তু সিজারের প্রায়োজন হলে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তিনি আরও জানান, মাসিক মিটিংয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও অন্যান্য সমস্যা সমাধানে কথা হয়। এছাড়াও দ্রুত সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।