স্বামীর কথার সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বক্তব্যের মিল নেই: পুলিশ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ১০:০০ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১
ধর্ষণের শিকার নারী

কক্সবাজারে নারী ধর্ষণের ঘটনায় অনেক ‘রহস্য’ পাওয়া যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট জোন) মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ। একই সঙ্গে ওই নারীর পর্যটক পরিচয় নিয়েও সন্দিহান পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, “তার (ধর্ষণের শিকার নারী) বক্তব্যের সঙ্গে স্বামীর বক্তব্যের মিল নেই। গত কয়েক মাসের মধ্যে তারা বেশ কয়েকবার কক্সবাজার এসেছেন বলে তথ্য-উপাত্ত হাতে এসেছে। নানা হোটেল ও কটেজে তার অবস্থানের তথ্যও মিলেছে। একেক জায়গায় তার নাম একেকভাবে লিপিবদ্ধ করা। এ কারণে তাকে প্রাথমিক দৃষ্টিতে ‘পর্যটক’ বলা যাচ্ছে না। মাসের ব্যবধানে এ নারী একাধিবার কক্সবাজার আসা এবং একেকবার একেকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার পেছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে আছে। আমরা বিষয়টি খোলাসা করে জানার চেষ্টা করছি।”

‘তবে তিনি (ধর্ষণের শিকার নারী) যত রহস্যময় হউক না কেন, বুধবারের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে’, যোগ করেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

এর আগে ভুক্তভোগী ওই নারী জানিয়েছিলেন, তিনি ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর সাহায্যের জন্য ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন। তবে পুলিশ তাকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার না করে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয়। এরপর র্যাবকে ফোন করে জানালে র্যাব ১৫ এর একটি টিম এসে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণের সময় কিংবা ওইদিনে তারা ৯৯৯ নম্বরে আসা কোনো ফোন পাননি। আমি থানার অফিসারদের সঙ্গেও কথা বলেছি, তারাও জানিয়েছেন ৯৯৯ নম্বরে নারী ও তার স্বামী কেউ ফোন করেননি। ঘটনার সময় দায়িত্বরত থানার ডিউটি অফিসারও জানিয়েছেন, এমন ঘটনায় ৯৯৯ থেকে থানায় কোনো কল আসেনি। তাছাড়া ৯৯৯-এ যে কেউ ফোন করলে সেটি রেকর্ড থাকে।’

তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলেছি ও তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন ৯৯৯-এ ফোন করেননি। তার স্বামী বলেছেন, তিনি একটি সাইনবোর্ডে র্যাবের নম্বর দেখে সেখানে ফোন করেন।’

এদিকে কক্সবাজার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে তাদের কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে তোলা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তারা আদালতে ছিলেন বলে জানিয়েছে কোর্ট পুলিশের একটি সূত্র।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট জোন) জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আদালতে তোলা হয়। তারা আদালতে ঘটনার বর্ণনা দেন। আদালতে তোলার আগে আমরা আমাদের মতো করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।’

এদিকে, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

সায়ীদ আলমগীর/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।