‘আমাদের হিসাব মতে লঞ্চটিতে ৩৫০ জনের মতো যাত্রী ছিলেন’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ০৫:৩১ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের হিসাবমতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পুড়ে যাওয়া লঞ্চে ৩৫০ জনের মতো যাত্রী ছিল। এর বেশি থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে। এছাড়া লঞ্চের ফিটনেস ঠিক ছিল বলে জানতে পেরেছি।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লঞ্চের দগ্ধ যাত্রীদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

নৌপ্রতিমন্ত্রী বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে একজন যুগ্মসচিবকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে কোনো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা এখনই বলতে পারছি না।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, যারা মারা গেছেন প্রত্যেকের পরিবারকে আমাদের তহবিল থেকে দেড় লাখ টাকা করে দেওয়া হবে। আর আহতদের সরকারের পক্ষ থেকে চিকিৎসা করা হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, লঞ্চের ব্যবসা কারা করে আপনারা সবাই জানেন। শেখ হাসিনার পরিবার লঞ্চের ব্যবসা করে না।

পরে তিনি লঞ্চের দগ্ধ যাত্রীদের ভর্তি হওয়া ওয়ার্ডগুলো ঘুরে দেখেন। তাদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।

এ সময় তার সঙ্গে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস সহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৮১ জন দগ্ধ রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। রোগীদের নারী ও পুরুষ সার্জারি বিভাগ এবং শিশুদের শিশু সার্জারি বিভাগে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যারা ৮০ ভাগের ওপরে দগ্ধ হয়েছেন তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১০ জন দগ্ধ রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, দুপুর পৌনে ১টার দিকে অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারজিয়া আক্তার নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় হাসপাতালের ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) সাতজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটিতে আগুনের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠির কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। দগ্ধদের মধ্যে ৭২ জনকে বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লঞ্চটিতে হাজারখানেক যাত্রী ছিলেন। সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। পরে পার্শ্ববর্তী দিয়াকুল এলাকায় বিপর্যস্ত লঞ্চটি ভেড়ানো হয়।

লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, রাত ৩টার দিকে লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। পরে সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। এসময় লঞ্চে বেশ কয়েকজন যাত্রী দগ্ধ হন। প্রাণে বাঁচতে অনেকে নদীতে ঝাঁপ দেন।

সাইফ আমীন/এসজে/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।