রাতে আশ্রয় না দেওয়ায় ধর্ষণের অপবাদ, পরে নিজেই ফাঁসলেন তরুণী
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধর্ষণের অপবাদ দিয়ে এক রিকশাচালককে ফাঁসাতে নিজেই পুলিশের কাছে ফেঁসে গেছেন এক তরুণী। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই তরুণীর নাম ফাতেমা (২০)। তিনি নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ফুলকাকান্দির ইয়াকুব আলীর মেয়ে। বুধবার দিনভর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সদর মডেল থানা পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, কুমিল্লা শহরে বাসাবাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন ফাতেমা। মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি ট্রেনযোগে কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। সেখান থেকে একটি রিকশায় উঠে বাসস্ট্যান্ডে যেতে চান। ওই রিকশার চালক ছিলেন রাজন (২৮)। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ফাতেমা নাসিরনগরে যাওয়ার কোনো যানবাহন পাননি। এ অবস্থায় রিকশাচালক রাজনকে রাতের জন্য তাকে আশ্রয় দিতে বলেন ওই তরুণী। ফাতেমাকে অসহায় ভেবে রাজন প্রথমে তার শাশুড়ির কাছে নিয়ে যান।
সেখানে গিয়ে শাশুড়িকে না পেয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে স্ত্রীকে সব খুলে বলেন রাজন। কিন্তু তার স্ত্রী ফাতেমাকে তার বাড়িতে রাতযাপন করতে দিতে রাজি হননি। তবে তাকে রাতের খাবার খেতে দেন রাজনের স্ত্রী। খাবারের পর রাতে রাজন ও তার স্ত্রী দুজনে গিয়ে ফাতেমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে রেখে আসেন। স্টেশনে দিয়ে আসার সময় ফাতেমা রিকশাচালক রাজন ও তার স্ত্রীকে হুমকি দেন। পরে ভোরের দিকে রেলওয়ে স্টেশন থানার টহল পুলিশকে পেয়ে রাজন তাকে ধর্ষণ করেছেন অভিযোগ করেন ওই তরুণী।
পুলিশ তাকে সদর মডেল থানায় নিয়ে যান। পরে রাজনকেও তার বাসা থেকে থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে রাজনের স্ত্রীর উপস্থিতিতে উভয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় রিকশাচালক রাজনকে ফাঁসাতে মিথ্যা গল্প বানিয়েছেন ওই তরুণী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, ফাতেমার বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে খোঁজ নিয়েছি। তার এর আগে চারটি বিয়ে হয়েছে। তবে কোনো স্বামীর সঙ্গে তার সংসার টেকেনি। তার মাসহ অন্য সদস্যরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরও জানান, ফাতেমা নিজেও অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/এএসএম