মেয়েকে নিয়ে প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে বৃদ্ধের আশ্রয়, পাশে দাঁড়ালো পুনাক
নিজের কোনো ঘর না থাকায় প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে বাস করেন বরগুনার বেতাগী উপজেলায় বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদার (৭৫) ও তার প্রতিবন্ধী মেয়ে। গবাদিপশুর বর্জ্যের মধ্যে নিরুপায় হয়ে বসবাস করা আশ্রয়হীন ওই বৃদ্ধ ও তার মেয়েকে দেখার কেউ নেই। তীব্র শীতে গোয়ালঘরের স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে বিছানো খড়কুটা-ছেঁড়া কম্বল এখন তাদের আশ্রয়স্থল। গণমাধ্যমে এমন খবর প্রচার হওয়ার পর বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার নজরে আসে। তার উদ্যোগে অবশেষে ঘর পেতে যাচ্ছেন বৃদ্ধ মকবুল।
ইতোমধ্যে বরগুনার পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির নিজের ঘরে থাকতে পারবেন মকবুল।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই পোস্টে উল্লেখ করা হয়, মকবুল হাওলাদার উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জিলবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি মেয়েকে নিয়ে খালেক হাওলাদার নামে এক প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে বসবাস করছেন। বয়সের ভারে ন্যুব্জ বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদারের দিন কাটে মানুষের কাছে হাত পেতে। পুরনো কাপড় আর কিছু হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে গোয়ালঘরে শেষ বয়সে সংসার পেতেছেন এ বৃদ্ধ।
কান্না ভেজা চোখে বৃদ্ধ বলেন, ‘খুব কষ্টে আছি আমি ও আমার মেয়ে। এই শীতে রাতে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। অসুস্থ থাকলেও টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারি না। টাকার অভাবে কিছু খেতে পারি না।’
স্থানীয়রা জানান, সাত বছর আগে মকবুল হাওলাদারে স্ত্রী মারা যান। তখন তার মেয়ে মীমের বয়স ৬ বছর। তখন এ বৃদ্ধ মেয়েকে নিয়ে একটি ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বসবাস করতেন। ছয় মাস আগে বৃষ্টি আর বাতাসে মকবুলের সেই কুড়ে ঘর মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এরপর প্রতিবেশী খালেদ হাওলাদারের গোয়ালঘরে ঠাঁই হয় বাবা ও মেয়ের। প্রায় ছয় মাস ধরে সেখানেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
মকবুল হাওলাদারের চার ছেলে বরগুনার বাইরে দিনমজুরের কাজ করেন। তারা কেউ তার খোঁজ রাখেন না বলে জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে আমরা সব সময়ই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। টেলিভিশনে খবর দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পুনাকের উদ্যোগে আমরা ওই বৃদ্ধ ও তার মেয়ের পাশে দাঁড়াবো। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের বসবাসের উপযোগী ঘর করে দিতে পারবো।
টিটি/কেএসআর/এমএস