রাজশাহীতে মুরাদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন খারিজ
রাজশাহীতে সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান ও ইউটিউবার মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো. জিয়াউর রহমান মামলার আবেদনটি খারিজ করে দেন।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ইসমত আরা এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের বিষয়কে কেন্দ্র করে আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেন বগুড়া জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উপদেষ্টা এবং বগুড়া জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। সেখানে দুজনকে আসামি করা হয়। রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আবেদনটি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করে পরবর্তী আদেশ শুনানির জন্য রেখে দেন। আজ আদালত আবেদনটি খারিজ করে দেন।
তিন কারণে ট্রাইব্যুনাল মামলার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানান পিপি ইসমত আরা। কারণগুলো হলো-
প্রথমত, যাকে কেন্দ্র করে এ মামলার আবেদন করা হয়েছিল (জাইমা রহমান) তিনি নিজে আদালতে এসে আবেদনটি করেননি এবং আদালতেও উপস্থিত হননি। মামলার বাদী একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি, যা উদ্দেশ্যমূলক।
দ্বিতীয়ত, বাদী বলছেন মামলা না নিলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হবে। অথচ, ঘটনাটি ১ ডিসেম্বরে ঘটেছে। কিন্তু মামলা করা হচ্ছে ১২ ডিসেম্বর। তাছাড়া এতদিন অতিবাহিত হলেও দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে এ মামলার আবেদনটি করতো। তাছাড়া এসময়ের মধ্যে জাইমা রহমান প্রাথমিকভাবে থানায় কোনো জিডি বা অভিযোগ করেননি। যদি তিনি করতেন আর থানা সেই জিডি বা অভিযোগ না গ্রহণ করতো তাহলে ভুক্তভোগী আদালতের আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি থানায় যাননি বরং তার হয়ে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি মামলার বাদী হয়েছেন।
তৃতীয়ত, ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত মনে করেছে, একই অভিযোগ একাধিক আদালতে মামলা হাওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়। বরং মামলাটি উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত মনে হয়েছে।
এর আগে রোববার ব্যারিস্টার জাইমা রহমান সর্ম্পকে কুরুচিপূর্ণ, নারীবিদ্বেষী, কুৎসিত ও মর্যাদাহানীকর মন্তব্য করার অভিযোগে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও মহিউদ্দিন হেলাল নাহিদের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদনটি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে সামাজিক ও ব্যক্তিগতভাবে অপমান, অপদস্থ ও হেয়প্রতিপন্ন করেছেন। আসামিরা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানসহ নারী সমাজের প্রতি অবমাননাকর, অপমানজনক এবং আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এর ফলে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
ফয়সাল আহমেদ/এসআর/এএসএম