ইউপি নির্বাচনের প্রচারণায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে আট সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে। তারা পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন নজরুল ইসলাম নামের এক ইউপি মেম্বার প্রার্থী।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা হলেন-আবুল বাসার কানুনগো। তিনি গাজীপুরের কাপাশিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ মজিবুর রহমান, দৌলতপুর সরকারি প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. ইফতেখার আলম, ঢাকা সড়ক ভবনে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা, মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলা ভূমি জরিপ অফিসের সার্ভেয়ার মো. মাসুদুর রহমান, মুন্সিগঞ্জ সড়ক বিভাগে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী ওসমান গণি, সুনামগঞ্জে কর্মরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে কর্মরত কানুনগো মো. আবুল খায়ের সরকার। এদের সবার বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার বাঁচামারা ইউনিয়নে।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারপ্রার্থী (বর্তমান মেম্বার) নজরুল ইসলাম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মস্থল থেকে প্রতি বৃহস্পতিবার নিজ এলাকায় আসেন। সরকারি ছুটির দুইদিন (শুক্রবার ও শনিবার) পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালান।
গ্রামে সহজ-সরল মানুষদের ভয়ভীতি ও টাকার বিনিময়ে ভোট কিনে নেওয়ার হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ করা হয় তাদের বিরুদ্ধে। তাই ওই ওয়ার্ডের কৈল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি খুবই ঝুকিপুর্ণ উল্লেখ করে সেখানে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান নজরুল ইসলাম।
নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো আবুল বাসার। তিনি বলেন, সাপ্তাহিক ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বাঁচামারা এসেছেন। তার ভাই গোলাম মোস্তফা মৃধা ইউপি মেম্বার পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ভাইয়ের জন্য একজনের কাছে ভোট চাইলেও কোনো মিটিং-মিছিলে তিনি অংশ নেন না। বিরোধিতার কারণেই অপর মেম্বারপ্রার্থী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাসুদ রানাসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁচামারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রনি সাহা বলেন, কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে এলাকায় প্রচারণা চালানোর লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার (১২ ডিসেম্বর) প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই পর্ব শেষ হওয়ার পর এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শুধু ভোট দিতে এলাকায় আসতে পারবেন। কিন্তু কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
আগামী ৫ জানুয়ারি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বি.এম খোরশেদ/এসআর/এএসএম