গ্রেফতার আতঙ্কে পুরুষশূন্য ঘিডোব গ্রাম
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় বিজিবির গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজন হারানোর শোক সামলে ওঠার আগেই পুলিশের করা মামলায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে ঘিডোব গ্রাম।
সহিংসতার ঘটনায় গত সোমবার (২৯ নভেম্বর) ওই গ্রামের অজ্ঞাতনামা প্রায় ৬০০-৭০০ জনের নামে মামলা করে পুলিশ। এ মামলার কারণে গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঘিটোব গ্রামের পুরুষেরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘিডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেওয়ালে গুলি ও রক্তের চিহ্ন লেগে আছে স্কুলটি এবার ইউপি নির্বাচনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিলো। কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অপরিচিত মানুষ দেখলেই ভয়ে সরে যেতে চাইছে ওই এলাকার মানুষ। গ্রাম ঘুরে কিছু ষাটোর্ধ বৃদ্ধ ছাড়া আর কোনো পুরুষের দেখা পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, ঘিটোব শান্ত প্রকৃতির একটি গ্রাম। কিন্তু ভোটের সঠিক ফলাফলের দাবি করাই আমাদের হয়তো ভুল হয়েছে। আমরা সংঘাত চাইনি। তবুও এ নির্বাচনটি আমাদের জন্যে দুঃস্বপ্নের মত এসেছে।
ওই নারী আরও জানান, পুলিশ-বিজিবির গুলিবর্ষণের পর অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে মামলা হওয়ার পর পুরো গ্রাম পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে। আমরা নারীরাও ভয় পাচ্ছি। আমরাও নিজেদের নিয়ে আটকের শঙ্কায় আছি। তবে ভিটার মায়ায় যেতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমরাই মরলাম আবার আমরাই মামলার শিকার হলাম। স্বজন হারানোর ব্যথা আমাদের সঙ্গে গ্রেফতারের ভয়ে আমাদেরই থাকতে হচ্ছে। আহত স্বজনের চিকিৎসার খরচ আমাদের নিম্ন আয়ে সম্ভব না। উপরন্তু পালিয়ে থাকার কারণে খাবারের জন্যে অর্থ উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
তানভীর হাসান তানু/আরএইচ/এএসএম