খুলনায় নারী ভোটারের হাতে প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ
খুলনা বিভাগের ২৯টি পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলর নির্ধারণ করবেন নারী ভোটাররা। পুরুষের তুলনায় নারী ভোটার বেশি হওয়ায় তারাই এবার আগামী দিনের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করতে মূখ্য ভূমিকা পালন করবেন।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ২৯টি পৌরসভায় এবার মোট ভোটার ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৯৯৮ জন। অন্যদিকে পুরুষ ভোটার ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৮৭৬ জন।
২৯টি পৌরসভার মধ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, চুয়াডাঙা, মেহেরপুরের সব পৌরসভায় পুরুষের চাইতে নারী ভোটার বেশি। শুধু কুষ্টিয়ার খোকসা, ঝিনাইদহের মহেশপুর, যশোরের চৌগাছা ও মনিরামপুরে পুরুষ ভোটার সামান্য বেশি। এরপরও এসব উপজেলায় নির্বাচনে বিজয়ী হতে নারীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা।
খুলনার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীর ভূমিকা ২৫ শতাংশ। ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত নারীদের মধ্যে প্রতি ১৩ জনে ৩ জন তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। সবচেয়ে বড় বিষয় ৬৫ ভাগ নারীই পরিবারের প্রধানের পরামর্শ অনুযায়ী ভোট দেন।
খুলনার নাগরিক ফোরামের প্রকল্প প্রধান সিলভী হারুন সাংবাদিকদের বলেন, নারী ভোটার বেশি হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের তাদের ভূমিকা অনেক কম। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন ৩০ শতাংশেরও কম নারী। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, নারীরা স্বামী, শ্বশুর অথবা তার বাবার দ্বারা প্রভাবিত হন।
খুলনার দাকোপ ও পাইকগাছা পৌর এলাকার নারী ভোটারা জানান, ভোট দেয়ার আগে তারা পরিবারের পুরুষ সদস্যরা নির্ধারণ করে দেন কাকে ভোট দিতে হবে। মুরুব্বীরা যাকে ভালো বলেন সেই প্রার্থীকেই ভোট দেন নারী ভোটাররা।
খুলনার তৃণমূল পর্যায়ের নারীদের সংগঠন নারী বিকাশ কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাডভোকেট অলোকানন্দা দাশ বলেন, আগে শতকরা ৮০ ভাগ নারী পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারতেন না। ভোট দিতে তারা নির্ভর করেন পুরুষ সদস্যদের ওপর। এখন এই হার শতকরা ৬০ ভাগ।
নারী বিকাশ কেন্দ্রের দাকোপ উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভাপতি দান কুমারী বলেন, নারীদের নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ভোট দিতে আমরা বোঝাচ্ছি। কিন্তু তা কাজে আসছে কম।
খুলনার দুটি পৌরসভার ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে একমাত্র নারী হিসেবে কাউন্সিলর পদে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডলি আখতার। তিনি বলেন, নারীরা আমাকে ভোট দিতে চাইলেও তারা অনেক সময় তাদের স্বামী অথবা পরিবারের কর্তার হুকুম শুনতে বাধ্য হবেন। তবে তিনি বলেন, এবার অনেক বিষয়েই নারীরা নিজের সিদ্ধান্ত নেবেন।
আলমগীর হান্নান/এসএস/এমএস