ঠাকুরগাঁওয়ে হঠাৎ মোবাইল ফোনের জোয়ার


প্রকাশিত: ১২:২৫ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫

৩০ ডিসেম্বরের পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁও চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। কে হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পৌর মেয়র এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন গরিবের বন্ধু বলে পরিচিত সোলায়মান আলী সরকারের মোবাইল প্রতীকের জোয়ার দেখা দিয়েছে।

ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক তাহমিনা আক্তার মোল্লা (নৌকা), বিএনপির প্রার্থী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই মির্জা ফয়সল আমিন (ধানের শীষ) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান গরীবের বন্ধু বলে পরিচিত সোলায়মান আলী সরকার (মোবাইল ফোন) প্রতীকে। এছাড়াও আরেকজন প্রার্থী হলেন মাহাফুজুল ইসলাম। নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে। তবে তার তেমন কোনো প্রচারণা নেই।

Nirbacon
প্রথমবারের মত মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হওয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীরাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কিন্তু গত দুদিন ধরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান গরীবের বন্ধু বলে পরিচিত সোলায়মান আলী সরকার (মোবাইল ফোন) প্রতীকে নির্বাচনী হাওয়া পাল্টে দিয়েছে।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে এ যাবত যত নির্বাচন হয়েছে ১১ নং ওয়ার্ডের প্রায় ৫ হাজার ভোট আওয়ামী লীগ বা নৌকা প্রতীকে দেয়া হয়েছে। এটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে শহরের মানুষের কাছে পরিচিত। কিন্তু এবার পৌর নির্বাচনে শেষ মূহূর্তের চিত্র পাল্টে গেছে। এলাকার লোক জোট হয়ে দলীয় প্রতীকে প্রচারণা না চালিয়ে স্বতন্ত্র প্রাথী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান গরীরের বন্ধু বলে পরিচিত সোলায়মান আলী সরকারের মোবাইল ফোন প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়াও সোলায়মান আলী সরকারের পৌরসভায় কিছু কিছু রির্জাভ ভোট রয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মনের মত না হওয়ার কিছু নেতা কর্মী সোলায়মান আলীর পক্ষে গোপনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর জয় নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানা গেছে। অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলের কারণে এখন সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গেছে।

১১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা বরাবরই নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে এসেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর লোকজন এই ওয়ার্ডের একটি প্রভাবশালী পরিবারের কাজে হস্তক্ষেপ করার কারণে ওই প্রার্থীর প্রচারণা বর্জন করেছে। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান সোলায়মান আলী সরকারের মোবাইল ফোন প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য ঐক্যমত পোষণ করেছেন সকলে।

রিকশাচালক শাহ আলম বলেন, আমাদের গরীরের বন্ধু সোলায়মান আলী সরকার। তাকে আমরা সব সময় সুখে দুঃখে কাছে পায়। আমরা তাকেই ভোট দিয়ে জয় যুক্ত করতে চায়। আমরা নৌকা বা ধানের শীষ বুঝি না।

Nirbacon-Pocaron
স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর চেয়ারম্যান গরীরের বন্ধু বলে পরিচিত সোলায়মান আলী সরকার বলেন, গত নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ করেছিলাম। শুধু দলীয় কোন্দলের কারণে আমার নিশ্চিত বিজয় হাতছাড়া হয়। এবারও আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়ে প্রার্থী হয়েছিলাম। কিন্তু দল আমাকে সমর্থন দেয়নি। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোবাইল ফোন প্রতীকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন পৌর এলাকার সবচেয়ে উন্নয়ন করেছি। সারাজীবন গরীবের সেবায় কাজ করে চলেছি। আমি বিগত দিনে নিঃস্বার্থভাবে পৌরসভার জনগণের পাশে থেকে উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। পৌরবাসী পুনরায় আমাকে সুযোগ দিলে আমি আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার চেষ্টা করবো। নির্বাচন স্বচ্ছ হলে জনগণ অবশ্যই আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে আশা প্রকাশ করছি।

তিনি আরও বলেন,  আমি নির্বাচিত হলে এর আগে পৌর মেয়র যে সকল দুর্নীতি করেছে তা জনগণের সামনে তুলে ধরবো এবং পৌরসভার উন্নয়নের জন্য এর আগের মেয়রকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে কে ধরছেন ঠাকুরগাঁও পৌরসভার হাল তা জানতে ভোটার ও প্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

১২টি ভোট কেন্দ্রে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। পৌর এলাকার মোট ভোটার সংখ্যা ৫২ হাজার ৯৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২৬ হাজার ৩৮৫ জন ও নারী ভোটার ২৬ হাজার ৪৪৫ জন।

রবিউল এহ্সান রিপন/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।