ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা
চলতি মৌসুমে নওগাঁয় আমন ধানের বেশ ভালো আবাদ হয়েছে। আর কিছুদিন পরই সে ধান ঘরে ওঠার কথা। তার আগেই পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
কৃষকরা বলছেন, কৃষি অফিস থেকে কোনো পরামর্শ না পেয়ে বাজার থেকে ইচ্ছেমত কীটনাশক নিয়ে এসে স্প্রে করছেন। তারপরও মিলছে না প্রতিকার। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, পোকার আক্রমণ হলেও লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট এক লাখ ৯৭ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় নয় হাজার ৯২০ হেক্টর, ধামইরহাটে ২০ হাজার ৩২০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ২৮ হাজার ৮৯০ হেক্টর,পত্নীতলায় ২৭ হাজার ২০০ হেক্টর, নিয়ামতপুরে ২৯ হাজার ৯০৫ হেক্টর, বদলগাছীতে ১৪ হাজার ৩২৫ হেক্টর, রানীনগরে ১৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ছয় হাজার ৭০০ হেক্টর, সাপাহারে নয় হাজার ৮০০ হেক্টর, পোরশায় ১৫ হাজার ৫৫০ হেক্টর এবং মান্দায় ১৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে।
জেলা সদর, বদলগাছী, রানীনগর ও আত্রাই উপজেলায় ধানে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে বলে জানান কৃষকরা। তারা বলছেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় আবাদ করতে সুবিধা হয়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় মাথায় হাত ওঠার উপক্রম। কৃষি অফিস থেকে কোনো পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ করেন তারা। তাই বাধ্য হয়ে বাজার থেকে ইচ্ছেমত কীটনাশক নিয়ে এসে স্প্রে করছেন। তারপরও প্রতিকার মিলছে না বলে জানান তারা।
বদলগাছী উপজেলার গোয়ালভিটা গ্রামের কৃষক হিরো ও শফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ক্ষেতে প্রায় পাঁচ শতাংশ হারে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠে পাওয়া যায় না। পোকার উপদ্রব ঠেকাতে দোকান থেকে ইচ্ছেমত কীটনাশক নিয়ে এসে স্প্রে করতে হয়। এতে অনেক সময় কাজ হয়, আবার হয় না। পোকার আক্রমণে কৃষকদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
মহাদেবপুর উপজেলার কুশালবাড়ি গ্রামের কৃষক নাজমুল হক জানান, তিনি এবার দেড় বিঘা জমিতে স্বর্ণা-৫ জাতের আমনের আবাদ করেছেন। এতে তার বিঘাপ্রতি ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে পোকার উপদ্রব ঠেকাতে কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সামশুল ওয়াদুদ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। পোকামাকড়ের তেমন আক্রমণ নেই। তবে কৃষকদের অসর্তকতায় কিছু সমস্যা হলে হতে পারে। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এ বছরও ফলন বিপর্যয় হবে না, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।
আব্বাস আলী/ইউএইচ/এমএস