ইকবালের মামলার নথি সিআইডিতে হস্তান্তর
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনের মামলার নথি অনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ এ-সংক্রান্ত সব নথি সিআইডির কাছে হস্তান্তর করে।
সিআইডি কুমিল্লার পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান জাগো নিউজকে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজওয়ান বলেন, গত ২৪ অক্টোবর রাতে পুলিশ সদরদ প্তরের নির্দেশে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে আলোকে মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় মামলার সব ডুকুমেন্ট অনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা এরই মধ্যে মামলাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করেছি। এ মামলায় ৮০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি বাকি ২০ শতাংশও দ্রুততম সময়ের মধ্যে উদঘাটন হবে এবং ইকবালের ইন্ধনদাতা ও জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
রিমান্ডে ইকবাল যেসব তথ্য দিচ্ছেন তা যাচাই-বাচাই করে দেখা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে সেসব তথ্য বলা যাচ্ছে না। মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হচ্ছে মণ্ডপ থেকে পুলিশের উদ্ধার করা পবিত্র কোরআন। তবে ওই কোরআন শরিফে অনেকেরই ফিঙ্গারপ্রিন্ট থাকায় আমরা (সিআইডি) পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এতে সুনির্দিষ্ট কারও ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাইনি।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্ত ইকবাল হোসেনসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন ঘটনার দিন সকালে পুলিশকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা রেজাউল ইসলাম ইকরাম, দারোগা বাড়ি মাজার মসজিদের সহকারী খাদেম ফয়সাল ও হুমায়ুন কবির সানাউল্লাহ।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিথিলা জাহান নিপার আদালতে ইকবালসহ চারজনকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানির শেষে আদালত তাদের প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত এলাকার সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে ইকবালকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কুমিল্লা মহানগরের নানুয়ার দিঘিরপাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৩ অক্টোবর মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার কোতয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও কোরআন অবমাননার অপরাধে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।
অন্যদিকে, পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের ঘটনায় কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় এ পর্যন্ত ১১টি মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাতটি, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানায় দুটি এবং দাউদকান্দি ও দেবীদ্বার থানায় একটি করে মামলা হয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত ৭০ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/এএসএম