পাহাড়ে কঠিন চীবর দানোৎসবকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি
আগামী ২০ অক্টোবর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র প্রবারণা উৎসব। এদিন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিহারগুলোতে শুরু হবে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় শুরু হয়েছে ফানুস (আকাশ প্রদীপ) তৈরি।
এবার কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে বাঘাইছড়ি উপজেলায় প্রায় পাঁচ হাজার ফানুস উড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মারিশ্যা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মানব জ্যোতি চাকমা। রঙিন কাগজ জোড়া দিয়ে, বাঁশের রিং ও মোমের সাহায্যে একেকটি ফানুস তৈরির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২০০ টাকা।
উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়নের তুলাবান নবরত্ন বৌদ্ধ বিহার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তুলাবান এলাকার ১৩ পাড়া-মহল্লার যুবকরা একত্রিত হয়ে ফানুস তৈরির কাজ করছেন।
এসময় কথা হয় সামত্রিপাড়া, হেডম্যান পাড়া, সচিমহোন পাড়া, পিত্তিপাড়া, ত্রিপুরাপাড়া ও দার্জিলিং পাড়ার বেশ কয়েকজন যুবকের সঙ্গে। তারা তিন থেকে পাঁচজন মিলে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে ফানুস তৈরির কাজ করছেন।
তাদের একজন ধুতি চাকমা। তিনি জানান, তুলাবান নবরত্ন বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান ৩০ অক্টোবর শুরু হয়ে ৩১ অক্টোবর রাত পর্যন্ত চলবে। সে লক্ষ্য নিয়েই তুলাবান গ্রামের ১৩ পাড়া মিলে এক হাজার ৩০০ ফানুস তৈরির জন্য কাজ চলছে।
এছাড়াও উপজেলার জীবতলী, তালুকদারপাড়া, আর্যপূর, জীবঙ্গছড়া, খেদারমারা, রূপকারী, সাজেকসহ বিভিন্ন এলাকার বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা ছাড়াই গ্রামবাসীর চাঁদায় এসব ফানুস তৈরির কাজ করা হচ্ছে।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এসব ফানুস তাদের পুণ্য এনে দিবে এবং নির্বাণ লাভে সহায়ক হবে। তুলাবান ছাড়াও উপজেলার প্রতিটি বৌদ্ধবিহার ও পাড়া-মহল্লায় কঠিন চীবর দান চলবে টানা একমাস।
মারিশ্যা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মানব জ্যোতি চাকমা বলেন, এবার গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছে। এখনো সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, কঠিন চীবর দান বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি পবিত্র অনুষ্ঠান। তাদের এ অনুষ্ঠান যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যাতে পালন করতে পারে; সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শংকর হোড়/আরএইচ/এমএস