শিবির ‘তকমা’র জবাবে যা বললেন সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট
প্রকাশিত: ১০:১৩ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২১

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ৬ নম্বর দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. ইকবাল হোসেন ইমাদ। রোববার (১০ অক্টোবর) দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাকে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে ইমাদ ছাত্রশিবিরের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার নামে ফেসবুক আইডিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে বেশ কয়েকজন জামায়াত নেতার পক্ষে স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশটের ছাপা কপি ছড়িয়ে পড়েছে।

তবে সোমবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন ইমাদ দাবি করেছেন, তার নামের সঙ্গে মিল থাকা ইমাদ নামের অন্য ব্যক্তি জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ওই ইমাদ একটি ব্যাংকে চাকরি করছেন। নামের সঙ্গে মিল থাকায় প্রতিপক্ষ ফেসবুক পেজে তার ছবি লাগিয়ে ওই ইমাদের কার্যক্রম তুলে ধরে মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
ইকবাল হোসেন ইমাদ আরও দাবি করেন, তিনি বা তার পরিবার কোনোদিন জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বা কোনোদিন জড়িত থাকার সম্ভাবনাও নেই।

ইকবাল হোসেন বলেন, নৌকা প্রতীক না পেয়ে আমাকে প্রতিপক্ষ জামায়াত-শিবির বানানোর চেষ্টা করছে। ২০০৫ সালে এইচএসসি পাস করে ২০০৭ সালে আমি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশ চলে যাই। ২০১৬ সালে দেশে এসে ব্যবসা শুরু করি। এরপর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেই। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করি। দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন কার্যনির্বাহী সদস্য। দলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, দল আমাকে নৌকা প্রতীকের জন্য মনোনীত করেছে। কিন্তু নির্বাচন ও মনোনয়নকে সামনে রেখে প্রতিপক্ষ আমার ছবি ব্যবহার করে ইকবাল হোসেন ইমাদ নামে ফেসবুক পেজ খুলে। মূলত একই ইউনিয়নের মাওলানা আব্দুন নুরের ছেলে ইকবাল হোসেন ইমাদ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি উপজেলা শিবিরের সেক্রেটারি ছিলেন। প্রতিপক্ষ সেই ইমাদের বিভিন্ন স্ট্যাটাস স্ক্রিনশট করে আমার নামে জড়িয়ে অপপ্রচার করছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল হোসেন বলেন, আমি জামায়াত-শিবির করলে আমার বিরুদ্ধে মামলা থাকতো। কিন্তু কোনো মামলা নেই। আমার কিছু আত্মীয় আল ইসলাহ ও তালামিযে ইসলামিয়ার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এসব সংগঠন নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেই সমর্থন দিয়েছে। আমি বিদেশ ঘুরেছি। কীভাবে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে হয় আমার জানা আছে। নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে আধুনিক করতে সময় লাগবে না।

শিবির নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান জাগো নিউজকে বলেন, ইমাদের বিরুদ্ধে শিবির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ শুনেছি। তবে কোনো প্রমাণ পাইনি। তার প্রতিদ্বন্দ্বী যে প্রার্থী এমন অভিযোগ তুলছেন তিনিও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে এসেছেন।

নাসির আরও বলেন, ইমাদ যখন আওয়ামী লীগের কমিটিতে এলেন তখন কোনো অভিযোগ ওঠেনি। এখন অভিযোগ তোলা হলেও কেউ কোনো প্রমাণ দিচ্ছেন না। ফেসবুকের কয়েকটি স্ক্রিনশট তো কোনো প্রমাণ হতে পারে না। এছাড়া প্রার্থী বাছাই নিয়ে বৈঠকে তিনি তৃণমূলের সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাননি। তাই মনোনয়ন দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ওই উপজেলায় একসময় আওয়ামী লীগ খুবই দুর্বল ছিল। বিভিন্ন দল থেকে লোকজন এনেই সংগঠনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। এছাড়া প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের প্রতি নিবেদনের পাশাপাশি তার জনসম্পৃক্ততার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হয়।

ছামির মাহমুদ/এসজে/এআরএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।