পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণ, ভেঙে পড়লো বিদ্যুতের ৯ খুঁটি
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেভির নয়টি খুঁটি ভেঙে পড়েছে। শনিবার (৯ অক্টোবর) দিনগত রাত ১টার দিকে খুঁটিগুলো ভেঙে মহাসড়কের সার্ভিস লেনে পড়ে যায়। এ ঘটনায় মির্জাপুর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার পর থেকে মহাসড়কের মির্জাপুর নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকার সার্ভিস লেনে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সার্ভিস লেনের পাশ দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনের মাটি কাটায় খুঁটিগুলো ভেঙে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সড়ক ও জনপথ, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনায়েম লিমিটেড চারদিন আগে ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ড্রেন নির্মাণকাজ শুরু করে। সার্ভিস লেনের পাশ দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেভির সঞ্চালন লাইন রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা ড্রেন নির্মাণের জন্য অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের খুঁটির পাশ থেকে মাটি কেটে রাখেন। এতে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। শনিবার রাত ১টার দিকে সঞ্চালন লাইনের তিনটি খুঁটি ভেঙ্গে পড়ে। চারটি খুঁটি সার্ভিস লেনের ওপর এবং দুটি খুঁটি হেলে পড়ে। পাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকার দিকে সার্ভিস লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঘটনার পর মির্জাপুর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পল্লী বিদ্যুৎ মির্জাপুর অফিস ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন। বিকল্প ব্যবস্থায় রাত সোয়া তিনটার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলেও রোববার সকাল ৭টার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক রাজিব হোসেন ও রিকশাচালক আলী বলেন, আমাদের প্রতিদিন একাধিকবার এ সড়কে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে হয়। ড্রেন নির্মাণে বিদ্যুতের খুঁটির গোড়া থেকে যেভাবে মাটি কাটা হয়েছে যে কেউ দেখলেই বুঝতে পারবে খুঁটিগুলো ঝুঁকিতে ছিল। অথচ কর্মকর্তারা এটি বুঝলেন না। বিষয়টি আমাদের মাথায় ধরছে না।
বংশাই রোডের ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, অপরিকল্পিতভাবে ড্রেনের মাটি কাটায় বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বিষয়টি পল্লী বিদ্যুতের একাধিক লাইনম্যানকে জানানো হলেও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনায়েম লিমিটেডের ভেকু অপারেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে বলেন, খুঁটির গোড়া থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় খুঁটিগুলো ভেঙে পড়েছে।
টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ মির্জাপুর অফিসের এজিএম আহসান হাবিব বলেন, মহাড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণ করতে গিয়ে খুঁটির কাছ থেকে মাটি কাটায় খুঁটিগুলোর ভিত্তি দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়েছে। বিকল্প ব্যবস্থায় উপজেলা সদরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ মির্জাপুর জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যুতের খুঁটির পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরুর আগে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে জানানো প্রয়োজন ছিল।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও ড্রেন নির্মাণ কাজের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা ড্রেনের মাটি কেটে বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ঝুঁকিতে ফেলেছিল। ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইনের ক্ষতিপূরণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বহন করবে। ভেঙে ফেলা খুঁটি সরিয়ে ফেলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি হাইড্রোলিক বড় ক্রেন নিয়ে আসা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এস এম এরশাদ/এসআর/জিকেএস