কক্সবাজারে সৈকতের ঝাউবাগান দখল করে গড়ে ওঠা বসতি উচ্ছেদ
অডিও শুনুন
কক্সবাজার সৈকতের সমিতিপাড়া ও হিমছড়ি পয়েন্টের ঝাউবাগান দখল করে গড়ে ওঠা বসতি অবশেষে উচ্ছেদ করেছে বনবিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটানা অভিযান চালিয়ে নতুন এসব ঝুপড়ি বসতি তুলে দেওয়া হয়। সামুদ্রিক ঝড়-ঝঞ্ঝার রক্ষাকবচ হিসেবে পরিচিত ঝাউবীথি কেটে সম্প্রতি এসব ঝুপড়ি ঘর গড়ে তোলে দখলদাররা।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা জানান, কক্সবাজার সৈকতের কলাতলী থেকে উত্তরে নাজিরারটেক পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বালিয়াড়ি রক্ষাকবচ ঝাউবাগান। ডায়াবেটিক হাসপাতাল পয়েন্ট থেকে উত্তর দিকের পুরোনো বাগানগুলোর বেশিরভাগ ঝাউ গাছই দুর্বৃত্তরা কেটে নিয়েছিল। আর জলোচ্ছ্বাসের ঢেউয়ের তোড়ে তলিয়ে যায় কিছু গাছ। এরপর আবারো চারা লাগিয়ে সৃষ্টি করা হয় ঝাউবাগান। বর্তমানে গাছগুলো প্রায় ৫ থেকে ১০ফুট লম্বা হয়েছে। এরই মাঝে ঝাউবাগানের গাছ কেটে জমি দখলে নিয়ে তোলা হচ্ছে ঝুপড়ি ঘর। গত সেপ্টেম্বরে বেশ কয়েকজন ১৫ থেকে ২০ শতক করে জমি দখলে নিয়ে ঝুপড়ি বসতি তুলছে বলে খবর পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, বনবিভাগকে বেকায়দায় ফেলতে প্রচার করা হয় ঝাউবাগান রক্ষায় গঠন করা কমিউিনিটি পেট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে কস্তুরাঘাট বিট কর্মকর্তা জমি দখল ও ঘর বাবদ আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ প্রচার হলে তা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দক্ষিণের নজরে আসে। তার নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযানে নামে বনবিভাগ। দিনব্যাপী চেষ্টায় সমিতিপাড়া ও হিমছড়ি এলাকায় অভিযানে ডজনের বেশি ঝুপড়ি বসতি উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়। এতে প্রায় ৬ একর বনভূমি দখল মুক্ত হয় বলেও জানান তিনি।
অভিযানে অংশ নেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (সদর) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার, কক্সবাজার রেঞ্জ এর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা, কলাতলী, হিমছড়ি, কস্তুরাঘাট ও ঝিলংজা বিট অফিসের বিট কর্মকর্তা অন্যান্য বনকর্মী ও সিপিজি সদস্যরা।
জানা যায়, সৈকত তীরের জমির মালিক জেলা প্রশাসন। কিন্তু ঝাউবাগান বনবিভাগের উদ্যোগে করা হয় বলেই জমির দেখভালও তাদের দায়িত্বে পড়ে। কিন্তু মাস দুয়েক আগে একটি দুর্ঘটনায় সদর রেঞ্জার মারাত্মক আহত হয়ে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ছিলেন। এরই মাঝে টহল কমে যাওয়ায় ঝাউবাগানের কিছু অংশে দখল করে ঘর ওঠায় স্থানীয় দখলদাররা। যদিও তাদের দাবি ১০-১২ বছরের পুরোনো ঘর মেরামত করেছেন তারা।
সায়ীদ আলমগীর/ এফআরএম/জিকেএস