বিয়ের নাটক সাজিয়ে সবজি ব্যবসায়ীর ৮ বছরের সংসার

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক কালীগঞ্জ (গাজীপুর)
প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০২১

গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিয়ের নামে নাটক করে এক নারীকে (৪০) আট বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নয়ন মিয়া (৪৫) নামের এক সবজি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত নয়ন ও কাজিকে আসামি করে মামলা করেছেন ওই নারী।

অভিযুক্ত নয়ন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের মাথিচর গ্রামের আমান উল্লাহর ছেলে। বর্তমানে তিনি কালীগঞ্জ পৌরসভার মুনশুরপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থেকে কালীগঞ্জ বাজারে সবজি ও ফলের ব্যবসা পরিচালনা করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এইচ এম ইমন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বনিবনা না হওয়ায় ১১ বছর আগে ওই নারীকে তার স্বামী তালাক দেন। এরপর বাবার বাড়ি থেকে একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কাজ নেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে সবজি ব্যবসায়ী নয়ন মিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিয়ের প্রলোভনে নয়ন তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। বিয়ের জন্য চাপ দিলে স্থানীয় এক নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) দিয়ে নয়ন বিয়ের নাটক সাজান। তিনি বিয়ের প্রমাণ হিসেবে কাবিননামা দেখতে চাইলে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। পরে মামলা করেন ওই নারী।

ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম গ্রামের নিকাহ রেজিস্ট্রার আবু তাহেরের বাড়িতে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে কাজি ছাড়াও কয়েকজনকে উকিল, মাওলানা ও সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়। সাদা কাগজে তাদের সই নেওয়া হয়। বিয়ে পড়ানো শেষে মিষ্টিও বিতরণ করা হয়। এরপর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার মুনশুরপুর, দড়িসোম, বাঙ্গালহাওলা ও গাজীপুর মহানগরীর মিরের বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করতে থাকেন।

jagonews24

দীর্ঘ আট বছরে নয়ন বিভিন্ন সময় নিজের ব্যবসার মন্দার অজুহাত দেখিয়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ ওই নারীর। এক পর্যায়ে টাকা দিতে না পারায় নয়ন তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালান।

ওই নারী অভিযোগ করেন, এসব বিষয়ে পুলিশের ভয় দেখালে নয়ন তাকে বিয়ে করেননি বলে জানান। নয়ন তাকে বলে, ‘তোকে ফুঁ দিয়ে বিয়ে করেছি ফুঁ দিয়েই আবার তালাক দিয়েছি। পারলে তুই আমার কিছু করিস। এ ব্যাপারে তুই যদি কারও কাছে যাস তাহলে তোকে গুম করে দেবো’। পরে তিনি কাজির কাছে গেলে তিনিও বলেন, কোনো কাগজপত্র হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) মো. আবু তাহের বলেন, ওইদিন আমার বাড়িতে তারা এসেছিলেন। তবে বিয়ের কোনো কাগজপত্র করা বা বিয়ে পড়ানো হয়নি।

অভিযুক্ত নয়ন মিয়া বলেন, তার সঙ্গে আমার প্রেম বা বিয়ের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তবে বিভিন্ন সময় তার বাজার-সদাই ও ওষুধ কিনে দেওয়াসহ তাকে বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা করতাম।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা্ নেওয়া হবে।

আব্দুর রহমান আরমান/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।