মুন্সিগঞ্জে মনগড়া বিদ্যুৎ বিল তৈরির অভিযোগ, বিপাকে গ্রাহক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মুন্সিগঞ্জ
প্রকাশিত: ১০:৪৩ এএম, ০৬ অক্টোবর ২০২১

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদীখানে মিটারের রিডিং না নিয়েই মনগড়া বিদ্যুৎ বিল তৈরির অভিযোগ উঠেছে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বিল সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ এনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিরাজদীখান জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রাহকরা।

ভুক্তভোগী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেপ্টেম্বর মাসের বিলের কপি হাতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকরা। গত কয়েক মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বর মাসে হঠাৎ করে বিলের পরিমাণ দুই থেকে পাঁচ গুণ বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তারা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় ব্যক্তির অবহেলা ও দুর্নীতি অনিয়মের কারণেই এমনটি হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

জানা যায়, মিটার রিডারদের অবহেলার কারণে বিদ্যুৎ গ্রাহকের হয়রানি ও দুর্ভোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতি মাসে মিটারের ইউনিট দেখার পরই গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ইস্যু ও সরবরাহ করার নিয়ম। কিন্তু বেশিরভাগ গ্রাহকদের মিটার না দেখেই, মিটার রিডাররা বাড়িতে বসে অনুমান নির্ভর মনগড়া ও ভুয়া বিল তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আবাসিক গ্রাহক উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর রাঙ্গামালিয়া গ্রামের আব্দুল আলিম জানান, জুলাই ও আগস্ট দুই মাসে তার বিল এসেছে ৫০০ টাকা। অথচ শুধু সেপ্টেম্বর মাসে তার ২২৫ ইউনিটের বিপরীতে মোট বিল এসেছে ১৩৪৩ টাকা।

স্থানীয় আউয়াল মৃধা নামের এক গ্রাহক বলেন, ‘প্রতি মাসে ৫০০-৬০০ বিল আসতো। অথচ শুধু সেপ্টেম্বর মাসে ২৯৫ ইউনিটের বিপরীতে মোট বিল এসেছে ১৮৪৭ টাকা। এই বাড়তি বিল আসার কারণ কি আমি জানিনা। আমার মতো অনেক গ্রাহককে এমন বাড়তি বিল দিতে হচ্ছে। আমরা কার কাছে যাবো বুঝতে পারি না।’

jagonews24

মালখানগর ইউনিয়নের আবাসিক গ্রাহক সাজেদুল ইসলাম জানান, তার জুলাই মাসে বিদ্যুৎ বিল হয়েছিল ১৪৭ টাকা এবং আগস্ট মাসে বিল হয়েছিল ২৪৯ টাকা। কিন্তু সেখানে সেপ্টেম্বর মাসে বিল এসেছে ১০৯৫ টাকা।

বাসাইল ইউনিয়নের গ্রাহক মানিক মন্ডল বলেন, ‘আমার জুলাই মাসের একটি বিল বকেয়া ছিল। সেই বিল আমি পরিশোধ করতে না পাড়ায় আগস্ট মাসের বিলের কাগজে দুই মাসের বিল এক সাথে চার্জ সহ আসে। আমি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যখন জানতে চাই আমার এত বিল কেন আসলো? তারা বলেন, দুটি বিলের টাকা একসঙ্গে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি হিসাব করে দেখি অনেক টাকার গড়মিল। এই বিষয়ে আমি যখন জানতে চাই আমাকে এক টেবিল থেকে আরেকটি টেবিলে পাঠিয়ে ঘুরাতে থাকে। তখন আমি রাগ করে টাকা পরিশোধ করে চলে আসি। এরকমভাবে চলতে থাকলে আমাদের পকেটের টাকা সব তারাই হাতিয়ে নিয়ে যাবে।’

এ বিষয়ে সিরাজদীখান পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম খোন্দকার মাহমুদুল হাসান জানান, কিছু গ্রাহকের এমন সমস্যা হয়েছে। নতুন করে কিছু কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তারা ভুল করতে পারে। এ বিষয়ে গ্রাহকরা লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কাউকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে না বলেও জানান তিনি।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এফআরএম/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।