অনুমতি ছাড়াই কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা, হবে সরকারি ইনস্টিটিউট
সরকারি ইন্সটিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইএলএসটি) ভবন নির্মাণের জন্য সিলেটে তিনটি পাহাড়-টিলা কাটার অভিযোগ উঠেছে। প্রাণিসস্পদ অধিপ্তর সিলেটের অধীনে এ নির্মাণ কাজ হচ্ছে। তবে এ কাজে নেওয়া হয়নি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি।
সোমবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে প্রাণিসস্পদ অধিপ্তর সিলেটের কার্যালয় সংলগ্ন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পাশাপাশি তিনটি পাহাড় ও টিলা রয়েছে। প্রায় ৫০ ফুট উঁচু টিলার অর্ধেক অংশ ২০ থেকে ৩০ ফুট উঁচু এলাকা এক্সাভেটর দিয়ে কেটে পাশের ঢালে ফেলে মাটি সমান করা হচ্ছে। বিষয়টি দাঁড়িয়ে দেখভালও করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড়-টিলার পাঁচ একর জায়গায় ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওয়াকওর্ডার দেওয়া হয়েছে। ২০ মাসের মধ্যে ভবনগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকার এম রহমান এনটারপ্রাইজ ও রয়েল কনস্ট্রাকশনসহ পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিলা কেটে মাটি সমান করছে এবং নানা মাপ জোক করা হচ্ছে।
এভাবে পাহাড়-টিলা কেটে সরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম। তিনি বলেন, আইএলএসটি নির্মাণের জন্য সরকারের সমতল জায়গার কোনো অভাব নেই। সেগুলোতে ভবন নির্মাণ না করে পরিবেশের ক্ষতি করে আইন অমান্য করা হচ্ছে। যা নিন্দনীয়।
কিম আরও বলেন, ব্রিটিশ আমলে পাহাড়-টিলায় স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, তবে পাহাড়-টিলা অক্ষত রেখে। বর্তমানে সরকার পাহাড়-টিলা ধ্বংস করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। পরিবেশ বিধ্বংসী এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে পাহাড়-টিলা ধ্বংস না করে উন্নয়ন কাজ চালানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী জাগো নিউজকে বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সরকারি ডেইরি ফার্মের টেকনিশিয়ান তৈরির জন্য সরকার ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি) নামে একটি ইনস্টিটিউট স্থাপন করছে। ৫ একর জমির মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের জন্য পাঁচটি ভবনের মাধ্যমে একটি গোলাকার একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া একটি ছাত্রী ও একটি ছাত্র হোস্টেল, একটি শিক্ষক এবং একটি স্টাফ ডরমিটরি, একটি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই এলাকায় একটি খেলার মাঠও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে এসএসসি পাশ করে শিক্ষার্থীরা ডেইরি ফার্ম ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি করতে পারবেন।
পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে এভাবে টিলা কাটার কোনো অনুমতি আছে কি-না জানতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে পরিবেশের অনুমতি বা ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমার জানা নেই।
তবে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মো. ইমরান হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি হোক আর বেসরকারি হোক কেউ পাহাড়-টিলা এলাকায় স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি) সিলেট নির্মাণের জন্য বা টিলা এবং গাছ কাটার জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র কেউ নেননি। আমরা টিলা কাটার বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশকে বলেছি যারা টিলা কাটছে তাদের যেন আইনের আওতায় আনে।
পরিবেশ অধিদপ্তর এ নিয়ে অভিযান চালাতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজের ব্যস্ততার জন্য অভিযান চালানো যায়নি। এছাড়া আমি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে বলে
ছামির মাহমুদ/এসজে/জিকেএস