মোবাইল চুরির অভিযোগে যুবককে মারধর
কক্সবাজারে মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে লাইন লাইন রাখাইন নামের এক যুবককে মারধর করেছে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে শহরের হাসপাতাল সড়কের ডিজিটাল হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পেছনে হাত বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি প্রকাশ পায়।
নির্যাতনের শিকার এনে লাইন লাইন রাখাইন (২৫) কক্সবাজার পৌর শহরের বড় বাজার রাখাইন পাড়ার একজন স্বর্ণকার এবং দুবাই প্রবাসী।
ভুক্তভোগী এনে লাইন রাখাইন বলেন, আমি দোকানের কাজ শেষ করে সন্ধ্যার দিকে হাটার জন্য বের হই। হাটতে হাটতে হাসপাতাল এলাকায় আসার পর পেছন থেকে এক যুবক এসে আমাকে মোবাইল চোর বলে বেধড়ক মারতে শুরু করে। একপর্যায়ে শহরের মোহাজের পাড়ার ‘চিহ্নিত ছিনতাইকারী’ শহিদুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে তার আরও তিন সহযোগী মিলে আমাকে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালায়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শহীদুল ইসলাম বাবু ও তার ৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় এজাহার দিয়েছেন উল্লেখ করে নির্যাতনের উপযুক্ত বিচার দাবি করেন তিনি।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে শহীদুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোহাজের পাড়ার কয়েক যুবক জানান, এসব নতুন ঘটনা নয়।
এ ঘটনার বিষয়ে পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী মালাউ রাখাইন বলেন, রাখাইন সম্প্রদায় শান্তিপ্রিয় মানুষ। আমরা সংখ্যায় কম বলে কি এমন গর্হিত আচরণ করা হয়েছে? আমরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।
নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা এথিন রাখাইন বলেন, স্বর্ণকার লাইন লাইন রাখাইনকে মোবাইল চুরির মিথ্যা অভিযোগে নিষ্ঠুর, অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে নির্যাতনের যে ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে তা কোনো সভ্যসমাজ এবং কোনো ধর্মের মানুষ মেনে নিতে পারবে না, মেনে নিবেও না।
তিনি আরও বলেন, ধরে নিলাম লাইন লাইন রাখাইন অপরাধী, তার জন্য দেশের প্রচলিত আইন আছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে, আইনশৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে পারতো। তা না করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে এভাবে অমানবিক নির্যাতন কেন? এ নিষ্ঠুর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত বিপুল চন্দ্র দে বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় একটি এজাহার পেয়েছি, মামলা প্রক্রিয়াধীন। ভিডিওটি দেখেই অভিযুক্তদের ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।
সায়ীদ আলমগীর/ইউএইচ/এমএস