কানুনগো ছাড়াই ১৪ বছর ধরে চলছে ভূমি অফিস

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ০৪:১৭ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা ভূমি অফিসে ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে শূন্য কানুনগো পদটি। প্রায় চার মাস ধরে শূন্য সহকারী কমিশনারের পদটিও। ফলে স্তূপ হয়ে পড়ে আছে জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবাগ্রহীতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি পদ শূন্য থাকায় উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ভূমি সংক্রান্ত সেবা কার্যক্রম অনেকটাই গতিহীনভাবে চলছে। বিশেষ করে জমিজমা সংক্রান্ত মিসকেস, ভিপি, নামজারি ও জমাভাগ, ডিমার্কেশনসহ বিভিন্ন অভিযোগকারী লোকজনের বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ জুন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুল ইসলাম পদোন্নতির কারণে অন্যত্র বদলি হয়ে চলে যান। এরপর থেকে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদ এলাহী নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ভূমি অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

এছাড়া অফিসটির গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ কানুনগো। কিন্তু পদটি শূন্য রয়েছে দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছরেরও অধিক সময়। সর্বশেষ কানুনগোর পদটিতে দায়িত্বে ছিলেন ফজলুর রহমান জমাদার। এরপর তিনি বদলি হওয়ায় পদটির শূন্য স্থান আর পূরণ হয়নি। এ পদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সার্ভেয়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সে অনুযায়ী বর্তমানে কানুনগো পদে অতিরিক্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী উপজেলা ভূমি অফিসের জাকির হোসেন সরদার। তিনি সপ্তাহে দু’দিন এসে দায়িত্ব পালন করেন।

শুধু তাই নয়, উপজেলাটির ১ নম্বর বুড়াইচ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তার পদটিও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন পৌর ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা অধীর কুমার গুহ।

এ বিষয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, দীর্ঘদিন এসিল্যান্ডের পদটি খালি থাকায় জনসাধারণের অনেক ফাইল আটকে আছে। ফলে গত কয়েক মাস ধরে ভূমি সংক্রান্ত বহু মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। জমির নামজারি জমাখারিজের অনেক আবেদন জমে আছে। এগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার স্বাক্ষর না হওয়ায় আবেদকারীরা দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, জমি-জমার মূল অফিস হচ্ছে ভূমি অফিস। সেই অফিসেই যদি দীর্ঘদিন প্রধান অফিসারসহ একাধিক পদের লোকজন না থাকে তাহলে কাজ করে দেবেন কে? আমরা জমি-জমার কাজকর্ম নিয়ে বেশ ভোগান্তির শিকার হচ্ছি। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছি না। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান জরুরি।

এ ব্যাপারে পৌর ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা অধীর কুমার গুহ বলেন, আমার দায়িত্ব পৌর ভূমি অফিসে। কিন্তু বুড়াইচ ভূমি অফিসে সহকারী কর্মকর্তার পদটি শূন্য থাকায় সেখানেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। দুই জায়গা দায়িত্ব পালন করতে খুব সমস্যা হয়। বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদ এলাহী বলেন, সাধারণ মানুষের ভোগান্তির বিষয়টি আমি বুঝি। পদগুলো শূন্য থাকার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন। এরপরও আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে চেষ্টা করবো শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণ করতে। সে অনুযায়ী আমার পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পাশাপাশি চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

এন কে বি নয়ন/এসজে/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।