স্বামীকে না জানিয়ে সন্তানকে দত্তক, উদ্ধার করলো পিবিআই
বিয়ের পর থেকে সংসারের অভাব অনটনের কারণে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া লেগেই থাকতো মোছা. কুলসুমা বেগমের। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে তৃতীয় সন্তান তায়িবকে (৩) নিয়ে আরেক জায়গায় বসবাস শুরু করেন কুলসুমা। তার কিছুদিন পর জন্ম নেয় চতুর্থ সন্তান ফারিয়া জান্নাত।
পরিবারে অভাব অনটন থাকায় কুলসুমা অন্যের বাসায় কাজ নেন। সন্তানদের বাড়িতে রেখেই কাজে যেতেন। এ সময় তায়িব বোন ফারিয়া জান্নাতকে খেলারছলে মুখ ও গলায় চাপ দিয়ে ধরতো, এমনকি মারধরও করতো।
আশঙ্কা থেকে স্বপন মিয়া (৩০) নামে এক কসাইয়ের কাছে ফারিয়া জান্নাতকে দত্তক দেন কুলসুমা। বিষয়টি স্বামীর কাছে গোপন রাখেন তিনি। এদিকে সন্তানকে না পেয়ে স্ত্রীসহ তিনজনের নামে আদালতে মামলা করেন শিশুটির বাবা মো. আব্দুল আলী।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার কাঠগোলা এলাকা থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক মো. দেলোয়ার হোসাইন জানান, সম্প্রতি স্বামী আব্দুল আলী দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে শ্বশুরবাড়িতে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার মেয়েকে না পেয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন। কুলসুমা জানান, তাদের মেয়ে ফারিয়া জান্নাত অসুস্থ। তাই অন্য জায়গায় রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে শিশুর বাবা বাদী হয়ে স্ত্রী, শ্যালক ও শ্বশুরকে আসামি করে মামলা করেন। ১৯ সেপ্টেম্বর পিবিআইকে মামলার দায়িত্বভার দেওয়া হয়। আজ ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
দেলোয়ার হোসাইন আরও বলেন, মামলাটি তদন্তভার পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে আমরা শিশুটি উদ্ধার করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করি। তবে মামলাটি আদালতে হওয়ায় এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
মঞ্জুরুল ইসলাম/এসজে/জিকেএস