মাধবদীতে চলছে আচারণবিধি লঙ্ঘনের মহোৎসব
পৌর নির্বাচনকে ঘিরে নরসিংদীর বস্ত্র নগরী মাধবদী এখন সরগরম। প্রার্থীদের প্রচারণায় মুখর শহরের অলি-গলি। আগামী পৌর পিতাকে ঘিরে চলছে সকল জল্পনা-কল্পনা। চলছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের মহোৎসব।
ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে বর্তমান মেয়র ও বিএনপি প্রার্থী ইলিয়াসের বিরুদ্ধে। প্রায় পাঁচ হাজার সমর্থক নিয়ে নিয়ে মিছিল শো-ডাউন ও জনসভায় করায় তার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন নির্বাচন কমিশন। জনসভা বন্ধের নির্দেশের পাশাপাশি আচরণবিধি মেনে চলতে বিএনপি প্রার্থীকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানায় কমিশন।
মাধবদী পৌরসভায় মেয়র পদে চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাজী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক, বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র হাজী মো. ইলিয়াছ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের প্রার্থী মো. হারুন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল বাতেন শাহীন।
পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রার্থী এবং সংরক্ষিত চারটি মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। প্রতীক বারাদ্দের পর থেকেই কোমর বেধে মাঠে নেমেছে হেভিওয়েট দুই প্রার্থী। পাল্লা দিয়ে চলছে ওঠান বৈঠক ও গণসংযোগ। ভোটারদের মন যোগাতে কাক ডাকা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণসংযোগ চালাচ্ছেন। শোনাচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। চলছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আর অভিযোগ খণ্ডনের প্রতিযোগিতা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে কালো টাকা ছড়াচ্ছে বিএনপির প্রার্থী। ১২টি ওয়ার্ড থেকে লোক ভাড়া করে ওঠান বৈঠকের নামে মাধবদী গরুর হাটে জনসভা পরিচালনা করেছেন। শহর জুড়ে গান মিছিল ও শোডাউন দিচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হাজী মো. মোশারফ প্রধান মানিক অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির প্রার্থী ও বর্তমান পৌর সভার মেয়র ইলিয়াস ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। ভোট কিনতে ভোটারদের মধ্যে কালো টাকা ছড়াচ্ছেন। আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে প্রতি মুহূর্তে। ওঠান বৈঠকের নামে ভাড়াটে লোক জমিয়ে জনসভা করে যাচ্ছে দেদারছে। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযোগ অস্বীকার করে বর্তমান মেয়র ও বিএনপির প্রার্থী হাজী মো. ইলিয়াস বলেন, শ্রমিকদের আহ্বানে একটি ওঠান বৈঠকে যোগ দিয়েছি। দাওয়াত দিয়ে কোনো লোক আনা হয়নি। অভিযোগ থাকতে পারে, তবে এটা যথার্থ নয়। বিগত পাঁচ বছর মাধবদীবাসীর উন্নয়নে কাজ করেছি। তাই ওঠান বৈঠক জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে। জনপ্রিয়তার জন্য যদি লোক আসে, সেটা কি আমার দোষ ?
জেলা সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী আমাদের নিকট মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। তৎক্ষণিক জনসভা বন্ধ করতে বিএনপি প্রার্থীকে নির্দেশের পাশাপাশি আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
সঞ্জিত সাহা/এআরএ/পিআর