এই দিনে মুক্ত হয়েছিল সৈয়দপুর
একাত্তর সালের ১৮ ডিসেম্বর নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা পাক হানাদারদের কাছ থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। এই দিন ভোরে ছয় নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনীর যৌথভাবে প্রবেশ করে আক্রমণ চালিয়ে সৈয়দপুর সেনানিবাস দখলে নেয়।
এসময় পালিয়ে যায় খান সেনাসহ তাদের দোষররা। এই বিজয়ে মুক্তি পাগল হাজার হাজার মানুষ গ্রাম থেকে শহরে প্রবেশ করেন। এ দিন মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম কাজী ওমর আলী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে শহরে আনন্দ মিছিল করে সৈয়দপুর পৌরসভা কার্যালয়ে ও আওয়ামী লীগ অফিসে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে।
দিনটি পালনে সৈয়দপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রজন্ম ৭১ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধে সৈয়দপুরের প্রেক্ষাপট ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২৩ মার্চ স্বাধীনতাযুদ্ধের শুরুতেই এখানে প্রথম শহীদ হন চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউপি চেয়ারম্যান মাহাতাব বেগ। ২৪ মার্চ প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ডা. জিকরুল হক, তুলসীরাম আগরওয়ালা, ডা. সামছুল হক, ডা. বদিউজ্জামান, ডা. ইয়াকুব আলী, যমুনা প্রসাদ কেডিয়া, রামেশ্বরলাল আগরওয়ালা, নারায়ন প্রসাদ, কমলা প্রসাদ প্রমুখকে সৈয়দপুর সেনানিবাসে হাত পা বেঁধে রাখা হয়। ১২ এপ্রিল তাদের চোখমুখ বেঁধে রংপুর সেনানিবাসের উত্তর পার্শ্বে উপশহরে সারিবদ্ধভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার পদস্থ কর্মচারীদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। পাকসেনা ও তাদের অবাঙালি দোসরদের হাতে নিহত হয়েছে অসংখ্য রাজনীতিক, ব্যবসায় সাধারণ মানুষ। ১৯৭১ সালের ১৩ জুন মুক্তিযুদ্ধকালীন সৈয়দপুর শহরে সবচেয়ে বৃহৎ গণহত্যা সংঘঠিত হয়েছিল।
এ দিন শহরের ৩৫০ জন মাড়োয়ারী পরিবারের সদস্যকে ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্তে পৌঁছে দেয়ার নামে ট্রেনে তুলে রেলওয়ে কারখানার উত্তর প্রান্তে সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে লুটে নেয়া হয় তাদের সর্বস্ব। শিশুদের বায়োনেট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করা হয়।
জাহেদুল ইসলাম/এমজেড/পিআর